মুজতাহিদ ফারুকী- কবি ও সাহিত্যিক।
মৃত্যু বিষয়ে আমার কোনও সবিশেষ অপশন নেই
মৃত্যু এক তুখোড় কমেডি, হাসি পায় কস্টিউম দেখে
ক্লাউনের মত নাকে লাল বল সেঁটে ঘরে এসে ঢোকে
হাতে মিনি প্রজেক্টর, কেরামান ও কাতিবের
শ্যুট করা ভিডিও ফুটেজ।
একগাল হেসে, নীরবে চালিয়ে দেয় সফেদ দেয়ালে,
দেখি আর মিটিমিটি হাসি তার মতো, কী অবুঝ ছিলাম জীবনে!
ট্রাজেডির নায়কের মতো ছক কেটে, সব ধীরোদাত্ত সমারোহে
হেঁটেছি কেবল কিছু ভাঙ্গনপ্রবণ নদী, সুনামী-সতর্ক-বার্তা-উপদ্রুত
মহাসাগরের শূন্য তীর ঘেঁষে
দেখি নাই ভবিতব্য ভেবে, চোখে জল ফেলিনি কখনও
প্রার্থনার একান্ত বৈঠকে।
নিজের জন্য কিছু চাইবার ছিলো কি না কখনও ভাবিনি।
কতজন ঠিকঠাক বলে যান নিজের মৃত্যুর দিনক্ষণ,
ইউনুস নবীর দোয়া পড়ে অনেকেই ফুসফুস থেকে
শূন্যে উড়িয়ে দেন শেষ বায়ুটুকু, স্বেচ্ছায় বেছে নেন গুল্মের গুণ।
মারী ও মড়ক ছুঁয়ে যারা বেঁচে ফেরে ফের সাজানো ডাইনিং,
পরিপাটি বেডে, তাদের মতোই আমি অপেক্ষার প্রতিদিন,
প্রতিটি রজনী আটার গোলার মতো বেলে বেলে
আকাশের মতো গোল আকারে সাজাই
তারপর বেশ করে গোশতের কিমাভাজা পুরে রোল করি
যতনে গুটিয়ে আনি ক্লিন সেভ চিবুকের নিচে
যেহেতু বিশ্বাসী নই আত্মহননে, ক্লাউনের হাতে রাখি উষ্ণ আঙুল
বলি, তোমার ভিডিও ক্লিপ রেখে যাচ্ছি গুগল ক্লাউডে
আমাকে পবিত্র দিনে নিয়ে যাবে সেটা জরুরী না
তবে কিনা, আম্মা যেমন বলতেন পাঞ্জেগানা নামাজের পর,
“ও খোদা আমাকে কারও মুখাপেক্ষী কোরো না জীবনে”
হয়তো তার আস্থার ঘাটতি ছিলো সন্তানের প্রতি।
বলি, যদি পারো আচানক বিছিও কারেন্ট জাল তেষট্টি বছরে
আর মোটে দুটি তো বছর, হাঁসের ছানার ইশকুলে
শিখে নেবো মেঘলোকে আনন্দ সাঁতার।