স্বামী বজ্রের সাথে বেচারা মেঘের ঝগড়া হয় দিনভর
সংসারের খুটিনাটি ছেলেমেয়ের ঝুটঝামেলা- এইসব নিয়ে কথা কাটাকাটি,
চুলের মুঠি ধরে হেঁচকা টান মারে বজ্র- ‘বেরিয়ে যা মাগি’!
কালি সন্ধ্যায় এলোকেশে বেরিয়ে পড়ে মেঘ
আর ফিরবে না ঘরে-
বুকের জমিনে থরে থরে সাজানো মমতা
বরফের চাঁই ভরা অভিমান
তার ভিতর থৈথৈ এক সাগর লোনা জল,
পাঁজরের অস্থি জুড়ে কেবলই পিছুটান-
ফিরে যাবার আহ্বানে কান পেতে থাকা।
না থাক, অনেক তো হলো সংসার সংসার খেলা,
এ কি ভালোবাসা? না কি অকারণ মায়াজাল?
শোঁ শোঁ বাতাসের সাথে ফুঁপিয়ে ওঠে বুকের পাশটা
পরাণের অলিগলি অন্ধকার ধুলিতে ছাওয়া,
হঠাৎ পাহাড়ের চূড়ায় জড়িয়ে যায় শাড়ির আঁচল!
সেই পুরোনো গন্ধ- প্রথম পরশ-
বহুদিন পর পাহাড়ের বুকে হাত রাখে মেঘ,
কেঁপে ওঠে ক্লিষ্ট শরীরখানি
বিজলির আলোয় যদি দেখে ফেলে বজ্রের শকুনি চোখ!
অথবা বলে দেয় যদি অন্য কোনো লোক?
মেঘের কালো চুল ছেয়ে যায় পাহাড়ের চূড়া,
বাহুর উষ্ণতায় গলে যায় বরফের চাঁই-
ফুঁপিয়ে ওঠে জমে থাকা কান্নার রোল
পাথর ঠেলে বেরিয়ে আসে ঝর্ণার ধারা-
গঙ্গোত্রীর পথে পথে হেঁটে সেই ঝর্ণার জল
গড়াই নদীতে এসে ফের কেঁদে কেঁদে একাকার।
তুমি তো দেখো নাই গড়াই নদীতে নেমে-
আমার অশ্রুর সাথে গড়াইয়ের জলের
কী যে বিশ্রী রকম মিল!
বিরহী পাহাড়ের মতো পথ চেয়ে বসে আছি
কোনো একদিন স্বামীর সাথে ঝগড়া করে
তুমি চলে আসবে এলোকেশী মেঘ।
রফিকুল্লাহ কালবী- কবি ও সাহিত্যিক।