প্রিয় কবিতা!
আমার ভোরগুলো এখনও ঠিক আগের মতোই,
একা একা ব্যালকনিতে দোল খায়।
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে যথারীতি দুপুর গড়িয়ে বিকেলের কোলেপিঠে কুয়াশা।
হকারদের হাঁকডাক ইদানিং আমার সাউন্ড প্রুফ ঘুমের কানে পৌঁছাতে পারে না বলে,
তোমার খুদেবার্তার আলমারিতেও তালাবদ্ধ অবেলার হিড়িক।
আমার বুকের চারকোনা আকাশটায় আজকাল ঘন-কালো মেঘের কেমিস্ট্রি,
চোখের বায়োলজিতে বর্ষা নদীর জলের হাহাকার।
সব থেকেও কিছুই না থাকার ফিলোসোফিতে তোমার ডাক নাম দৌড়ায়।
আমি অবাক বিস্ময়ে আমার স্বপ্ন হাতড়াই,
আমার স্বপ্ন হাতড়াই প্রথম যৌবনের ভুল সমীকরণ সমান সমান ভুল সমাধানে।
যেখানে গৃহস্থ ভালোবাসার পাটিগণিতে,
তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে অনবরত উঠানামা করে আমার বর্তমান।
কবিতা!
আমার সবগুলো দিনরাতের ফিজিক্সে ঢুকে পড়েছে,
জীবনের কিছু মুখস্থ সূত্রের নিয়তি।
ম্যারিজুয়ানার নেশাতুর অভ্যাসে কিলবিল করে,
ঘোর কাটা বিক্ষিপ্ত ভবিষ্যত।
যেখানে তোমার মতো দেবীর উপাসনায় আজকাল লকডাউনের সাইরেন।
তবুও তুমিময় চৈতন্যের সিঁড়ি ঘরে দাঁড়িয়ে,
আমি এখনও তোমারই অপেক্ষা ঘুমে রাত ভোর করি।
কারণ একদিন তোমার খুশবু ঘোরেই,
ব্যালকনি থেকে আমার ঘরে লাফিয়ে আসবে ভোর।
তোমার ঠোঁটের রোদ্দুরে আবারও ঝলমলে হবে,
আমার শীতার্ত বৈরাগ্যর পুরোটা শহর।
আমার ঘর দোর বিছানা বালিশ সহ প্রতিটি আসবাবপত্রে,
এখনও তোমাকে ভালোবাসার বিশ্বাসেরাই ধ্যানমগ্ন।
আমার ইহ জনমের পুরোটাই আমি তোমার ঠোঁটে সঁপে দিয়ে,
শেষ বারের মতো মৃত্যু নিব।
কারণ!
স্বর্গের পরিতৃপ্তি আমি একমাত্র তোমাতেই যাপন করেছি কবিতা।
তাই তো আমি তোমাতেই আমার আখেরাত সাজাতে চাই।
চাই তোমার কাব্য হয়েই এক বিমূর্ত সৌন্দর্য অনুবাদে আকঁতে তোমায়।
নাজনীন নাহার – কবি ও সাহিত্যিক।