চিঠিটা তুমি অনেক আগেই
পোস্ট করেছিলে জানি
কি করবো বলো?
আমিতো সংক্রমনের ভয়ে
আজকাল ডাক বাক্সটির
ধারে কাছেও যাইনা।
আজ ভর দুপুরে হঠাৎ কে যেনো ডেকে বললে
‘-লেখা’ তোমার একটি চিঠি এসেছে
আমি বললেম নিয়ে এসোনা-গো!
সংবাদদাতা বললে, পারবো নাগো
ওটাতে যে লিখা আছে
চিঠিটা তুমি নিজেই বাক্স থেকে নিও,
শোনে আমার বুঝতে বাকি রইলো না
এটি যে তোমারই পাঠানো লিপিকা।
আমিতো ভয়কে তুচ্ছ করে লুপে নিলেম
তোমার মুক্তাক্ষরে লিখা দীর্ঘ প্রতিক্ষার
মধুমাখা ভালোবাসার পত্রখানি
এক টানে ছিড়ে নিলেম খামটা
আর দেখলাম তুমি কি সুন্দর লিখেছঃ
প্রিয়তোষ প্রিয়ত্বমা সুলেখা
জানি এতক্ষণে জেনে গেছো
তোমার হিমু এখন হাসপাতালের ICU তে।
তার পরম বন্ধুটির অতি সন্নিকটে
বন্ধুটি নাকি তোমার চেয়েও
আমাকে অনেক ভালোবাসে’গো
তাই সে আমাকে খু উঁ ব শক্ত করে
আলিঙ্গন করে আছে,
একদমই ছাড়তে চাচ্ছেনা।
আমি’না ওকে কতবার বুঝিয়েছি
আমিতো আমার সুলেখাকে ভালবাসি,
ওতো আমাকে ওর হৃদয়ের কেন্দ্রে
অতি যত্নে বসিয়ে রেখেছে,
কে শোনে কার কথা ওর প্রেম নাকি
চিরসত্য চির অম্লান, চির ভাস্মর!
সেতো বড়ই নাছোড় এক প্রেমিক
তারপর আ্মাকে একটু দয়া করে
এইটুকু সময় দিলে যে, তোমাকে
দুটি কথা লিখার, তুমি বিশ্বাস করবে?
খুব কষ্ট হচ্ছে, কলমটা যে ঝরে যাচ্ছে !
কাঁপা কাঁপা হাতে একটু একটু লিখছি
জানো সুলেখা আমার যে ফুসফুসটিতে
তুমি ছিলে শ্বাস প্রশ্বাসের অক্সিজেন হয়ে
ওটি যে আজ ঝাঝরা হয়ে গেছে,
এই কঠোর জীবানুটি টেনে হিঁচড়ে
ওটাকে শেষ করে দিয়েছে গো প্রিয়
তুমিতো আর ওটাতে থাকতে পারবে না সোনা।
আমার হৃদপিন্ডটিতে রাখা তোমার ছবিটা যে
এখন রক্ত জমাট হয়ে আড়ালে পড়ে গেছে
ডাক্তাররা বলছে ঐ জমাট’টা নাকি
তোমার চাঁদ মুখের ছবিটাকে এক্কেবারে
চেপে ধরে আছে, ওটা নাকি আর চমকাবেনা !
‘সু–’ তুমি অপেক্ষায় থেকো তোমার আমার
মিলনের সানায়ের সুর বাজবে, তুমি শুনবে
আমি দেখব ওপারে্র কোন এক বাসরে
জানো ‘-লেখা’? আ–র পা্রি না কলমটি ধরতে
বলো তুমি পড়তে পারবে তো
আমার কম্পিত হাতের লেখা শেষ চিঠিটা?
“ইতি তোমার হিমাংশু”
রওশন চৌধুরী- কবি, ও এডমিন চেতনায় সাহিত্য