আমফানেরই ধ্বংসলীলার একটি বছর পর,
আছড়ে পড়ল হায়রে আবার ইয়াস ঘূর্ণিঝড়!
দেড়শো কিমি বেগে হলো প্রলয় নাচন তার,
পিষেই দিলো উপকূল সে বাংলা ওড়িশার!
গাছগাছালি পড়ল শুয়ে উড়ল ঘরের চাল,
গাছের তলায় পড়ল খসে কাঁদির কাঁচা তাল!
তাণ্ডব এমন কোনোদিনই দেখে নি রে কেউ,
নারকেল গাছের উপর দিয়ে সমুদ্দুরের ঢেউ!
দানুবে ঢেউ আছড়ে পড়ল সৈকতে বারবার,
কংক্রিটের সব রাস্তা হলো মুহূর্তে চুরমার!
থ হয়ে লোক দেখল চেয়ে এমনই তার রোষ,
খড়ের মতন যাচ্ছে ভেসে গরু-ছাগল-মোষ!
সামনে পড়া ঘরবাড়ি বা ইলেকট্রিকের পোল,
কাঁধে তুলেই যাচ্ছে নিয়ে বলে ‘হরিবোল’!
নোনা জলের তলায় গেল ভেড়ি খামার খেত,
লাখো লোকের বক্ষে ইয়াস মারল কষে বেত!
এক নিমিষেই হলো মানুষ সহায়সম্বলহীন,
সব হারিয়ে কাটছে এখন অনাহারেই দিন!
ষোলোআনাই সত্যি কথা একটুও নয় ভুল,
শ্মশান করেই দিল রে সে গোটা উপকূল!
সর্বনাশী ”দানব ঝড়ের” ধ্বংসলীলার পর,
নাড়ীর টানেই ছুটল মানুষ খুঁজতে বাড়িঘর।
বাড়ি কোথায়? ধূ-ধূ মাঠ ! কিছুই সেথা নাই,
বাঁচার জন্যে ‘অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান’ তো চাই!
চোখের সামনে মুহূর্তেই সব খেয়েছে জল,
হারালে আজ চলবে নারে কিন্তু মনোবল!
জীবন মানেই বেঁচে থাকা লড়াই করে রোজ,
ধ্বংসের মাঝে চলছে তাই জীবনেরই খোঁজ!
ঘরে ঘরে নিত্য যারা জোগান দেয় মাছ ভাত,
যে যার মতন তাদের দিকে চলো বাড়াই হাত…
বিষ্ণুপদ বিশ্বাস- কবি ও সাহিত্যিক বর্ধমান,ভারত।