আমি সেই কবিতা লিখতে পারি না
যে কবিতার
প্রতিটি বর্ণ রূপ রস গন্ধ তলিয়ে দেবে
তোমরা সমুদ্র তলে অথবা
কবিতার প্রতিটি দাড়ি কমা সেমিকোলন বিরামচিহ্ন ভাসিয়ে দেবে কেউ
বেওয়ারিশ লাশের মতো গঙ্গার পবিত্র জলে।
আমি সেই কবিতা লিখতে পারি না
যে কবিতার জন্য
চাপিয়ে দেওয়া হবে অনাহারে
অর্ধাহারে দলিত মানুষের ওপর কর।
কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত লাশ
বলাৎকার প্রমান লোপাটের অভিযোগে অভিযুক্ত আসামির বেকসুর খালাস।।
আমি সেই কবিতা লিখতে পারি না
যে কবিতা আবৃত্তি করার জন্য
তোমার কন্ঠ রোধ করা হবে।
কন্ঠ রোধ করা হবে কৃষকের,
কন্ঠ রোধ করা হবে শ্রমিকের,
কন্ঠ রোধ করা হবে সাংবাদিকদের
প্রতিবাদী যুবকের।।
আমি সেই কবিতা লিখতে পারি না
যে কবিতার জন্য,
খানাতল্লাসি চলবে শহরের অন্ধ গলি
তল্লাসি চলবে ভিখারীর থলি
তল্লাসি চলবে হকারের ঝুড়ি।
তল্লাসি চলবে চুলের আগা
তল্লাসি চলবে নারীর অন্তর্বাস
আমার বুক পকেট ।।
আমি সেই কবিতা লিখতে পারি না
যে কবিতা স্তব্ধ করে দেয়
খেটে খাওয়া মানুষের জনজীবন
স্তব্ধ করে দেয় শহরের পাঁচ মাথা
স্তব্ধ করে দেয় অ্যাম্বুলেন্সের চাকা
স্তব্ধ করে দেয় গ্ৰাম্য উন্নয়ন
স্তব্ধ করে দেয় শিশুর অধিকার
চালু কারখানা।
আমি সেই কবিতা লিখতে পারি না
যে কবিতাটি
এখুনি বাতিল বলে বিবেচিত হবে
জ্বলবে রাজ রোষানলে
অথবা হবে বাজেয়াপ্ত।
চারদিকে বেজে উঠবে সাইরেন।
সমুদ্র হতে হিমালয়, স্তব্ধ হবে যান চলাচল,
বিমানবন্দরে জারি হবে রেড অ্যালার্ট
ঢাকা পড়বে সূর্য,
লোহার হাতকড়া নিয়ে অপেক্ষারত উর্দিধারী সৈন্য
নেমে আসবে গাঢ় অন্ধকার আমার জীবনে।।
বিকাশ চন্দ্র হাওলাদার – কবি।