কেন এতো প্রহসন,
এতো কেন চুরির পণ!
কেন হিংসা, ক্লেশ, রেষারেষি এতো,
এসো সত্য সুন্দরে মাতি বোন ও ভ্রাতো।
কে কত লিখে কবিতা শত,
লিখে গল্প আর উপন্যাস?
কার কত ছাপালো বই?
কীভাবে কে হলো মহীয়ান?
এসব বলে মনে কী করি,
আমি নিজে সাধু হলেম আজ!
মনটা আমার বেজায় জটিল,
এভাবেই খুললাম হিংসার ভাঁজ।
কাকে কে কত করব ছোট,
এই যদি থাকে লেখক মনে!
নিজেই নিজে লজ্জায় মরি,
আমি কী গো এই লেখক দলে!
মুখে মুখে হাসি লুটিয়ে মোরা,
কত ভালোবাসি বলি সহজে।
অন্তরেতে বিষ হিংসা পুষে রাখি,
হায়রে কলঙ্কিত মনের লেখক রে!
এমন আছে দু-চারজন,
এমন আছে খুব কাছেতেই।
তাদের খোলসে নিপাট ভদ্রতা,
অন্তরে কুটিল মন্ত্র ভাবেতেই।
আমি পারি না তাই বলে কী,
অপরে না পারুক তাহাই চাই।
আমি কবে মানুষ হব!
লেখক পরে হই ভাই রে ভাই।
সাহিত্য জগতে দেখলাম কত কত,
কত হাসিমুখ কত চেহারা সুন্দরতায়!
মনের ভেতর জ্বলে পুড়ে গোপনে,
কিছু ঠিক প্রকাশিত হয়েই যায়।
করেই ফেলে প্রকাশ কিছু সম্মুখে,
করেই ফেলে হা-পিত্যেশ হায়।
ধিক ধিক ধিক্কার এমন মননে,
এমন কবিতে, এমন লেখকে।
যাদের মুখ এক মুখোশ অনেক,
মম ধিক্কার তাদের সকলকে।
আত্মশুদ্ধি আদৌ কী ঘটবে,
আদৌ কী মোরা হব মানুষ!
সৃজনশীলতার পবিত্র বোধে,
আমরা কী হব সত্যি সাধক?
কী জানি কী লোভেতে ডুবে,
এ হেন কাজ করি গো গুণী!
হয়তো এ মনে এ দুঃখ লয়ে,
ছেড়ে যাব এ সাহিত্য ভূমি!
হয়তোবা তারা উহাই চাহে,
বলতে পারে না সরাসরি।
পিঠ পিছে ধারালো ছুরি মেরে তারা,
আত্ম তৃপ্তিতে করে গড়াগড়ি।
কত আর কত করব ক্ষমা,
কত আর ধরব ধৈর্য গুণী।
এখনও আমি সত্য মানি সত্যরে সদা এ প্রাণে জানি।
স্রষ্টাকে বলি ওহে বিধাতা,
মানুষ বানাও আমাদেরে।
জ্বলা জ্বলি আর হিংসা ছেড়ে,
মানবিক গুণে শুদ্ধ করো সকল আত্মারে।
না হয় কিছু কম লিখলাম আমি,
না হয় অপরে লিখল বেশি।
তাতেই কেন ধীষ্টতা নিয়ে মনে,
এতোটা করব রেষারেষি।
মানুষ বানাও আগে আমাদেরে,
তারপরে বানাও শিল্পী হে।
সৃষ্টিকর্তা তুমি মোদেরে,
মননে করো শুদ্ধ যে।
নাজনীন নাহার – কবি ও সাহিত্যিক।