একদা বাড়ির পাশে টিলাটায় শরতের শুভ্র ছোঁয়া পেয়ে
ভরে যেতো শাদা কাশফুলে,
সুশান্ত চাঁদনী রাতে উঠোনে দাঁড়ালে নিমিষেই
ঐ কাশফুলের রাজ্যে উড়ে যেতো মনটা পেখম তুলে ।
এখন সেখানে আর নেই সেই টিলা, নেই সেই কাশফুল
ব্যাকুল মনটা ও যে আর হারায় না,
বেহায়া অসুর মন বুকের ভেতর বদ্ধ খাঁচায় থাকে যে অন্তরীণ ;
শুধু করে ছটফট ! কাউকে সে জানায় না।
একদা বাড়ির ছোট্ট ঐ ঘাটায় শরতের সোহাগ – আদর পেয়ে
থোকা থোকা শিউলি ঝরতো,
স্নিগ্ধ সে কুয়াশা ভরা ধূসর সকালে !
দুহাতে শিউলি ফুল ! কুড়াতে কুড়াতে মন লাফিয়ে উঠতো !
এখন অরূপ সেই শিউলি গাছও নেই
ফুল কুড়ানোর সেই ধুমও যে নেই,
দুহাতে তানপুরাটা ধরে গাই বেসুরো গলায়
শরতের সারি গান, নাচি ধেই ধেই।
টিলা কেটে বেঁধেছি যে বহুতল ঘর,
ছোট্ট করিডোর হতে অনায়াসে আসমান ছুঁই,
দুহাত বাড়ায়ে করি অনুভব শহুরে তপ্ততা,
নাগরদোলায় দোলে অশরীরি মন কথা ; হৃদয়ে ফুটায় সুঁই।
শিউলি গাছটা কেটে রেখেছি সেথায় টব হরেক রকম,
বিদেশি ফুলের মহাসমারোহ ; আভিজাত্য বাড়ায় চরম !
আমি লিখে যাই সেই চিরাগত চেতনার রূপের মায়ায়,
শাদা কাশফুল আর ঐ শিউলি কবিতার শরীরে হারায়।
কাজী আনারকলি- কবি,সাহিত্যিক ও নাট্যকার।