২০১২ সাল তুমি দশম শ্রেণির ছাত্র আর আমি ক্লাস সেভেন৷ আজ কতগুলো বছর কেটে গেলো৷ এর মধ্যে তোমার সাথে আমার দেখা হয় দুইবার৷
জ্ঞানই শক্তি কোচিং সেন্টারে আমরা একসাথে কোচিং করতাম যদিও আমাদের রুম আলাদা কিন্তু তা ছিলো পাশাপাশি৷
সে- আমার মনে আছে,আমরা কেউ কারো নাম জানতাম না৷
আমি- হুম, আর তোমার নাম তুমি তোমার সব বন্ধুদের বলতে নিষেধ করে দাও আর আমিও একই কাজ করি৷
সে- তুমি তো একটা ফাজিল চুপ করে আমার নোট খাতা দেখে নাম জেনে নিয়েছো৷
আমি- হা হা হা হা আমি এখনো এমন গো৷
সে- হুম তাতো দেখতে পাচ্ছি৷
আমি- জানো আমার এটা খুব ভালো লাগতো যে তুমি তোমার ক্লাসে আর আমি আমার ক্লাসে সব সময় ফাস্ট হয়ে একসাথে প্রাইজ পেতাম৷
সে- তোমার মুখ দেখে বোঝা যেতো তুমি কতটা হ্যাপি৷
আমি- জানো সবাই আমাদেরকে নিয়ে পিঠ পিছে অনেক কথা বলতো৷
সে- হুম আমি জানি তাই তোমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিতাম৷
আমি- খুব মন খারাপ হতো৷ যাক এখন আর মন খারাপ করে দিও না৷ (দুষ্টু হাসি দিয়ে)
সে- হাসির পেছনে রহস্য পাচ্ছি৷ (একটু ভ্রু কুঁচকে)
আমি- হুম তোমার সবটাতেই সন্দেহ৷
সে- তোমার মনে আছে ঈদের সময় তুমি আমাকে একটা কার্ড দিয়েছিলে আর আমি তোমাকে৷
আমি- হুম,(মুচকি হেসে)৷ তোমার কার্ড টা আমার কাছে এখনো আছে আজ ১০ বছর ধরে যত্ন করে রেখেছি৷ মাঝে মাঝে খুলে দেখি ভালোবাসার পরশে লেখা নিমন্ত্রণ পত্রটি৷
সে- এখনো আছে কি বলো(অবাক দৃষ্টিতে)৷ আমার তো এটাও মনে নেই কি লিখেছিলাম৷
আমি- তাতো তুমি ভুলবেই কিন্তু আমার কাছে এটা এখনো স্পেশাল৷ (মায়া ভরা দৃষ্টি নিয়ে)
সে- আচ্ছা তোমার কি এখনো মরিচে হাত জ্বালা করে???
আমি- ওই পিকনিকের পর থেকে আজ দশ বছর হলো আমি মরিচ হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখিনি৷
সে- সেদিন তোমার কষ্ট দেখে আমারও খুব কষ্ট হয়েছিল৷ তোমার হাত দেখে মনে হয়েছিল এই বুঝি হাত ফেটে রক্ত গড়িয়ে পড়বে৷
আমি- জানো খুব কান্না করেছিলাম তোমরা বাসায় আসার আগে৷
সে- বুঝতে পেরেছি আমি৷ ইচ্ছে করছিলো তোমার দুহাত ধরে একটু ফুঁ দিয়ে দেই কিন্তু আমি তোমার কাছে পর্যন্ত আসতে পারিনি৷ কারণ কি জানো, তোমার এমন হয়েছে আমি আগে জানতে পেরেছি আর শোনার সাথে মন খারাপ হয়ে যাওয়ায় আমার বন্ধুরা তোমাকে জড়িয়ে আমাকে অনেক কথা বলতে শুরু করেছিলো৷
আমি- তুমি একটা বার আমার কাছে আসোনি আমার খুব খারাপ লেগেছিল৷
সে- এখন তো তোমার কাছে আছি তাই না৷ প্লিজ নতুন করে আর কষ্ট পেও না৷
এভাবেই অতীতের স্মৃতি জড়িয়ে অনেক কথা হলো আমার আর আমার জীবনের প্রথম শত্রুটার৷ একসময় লড়াই করতাম কে ফাস্ট হবে পরিক্ষায়৷ দুজনের মনেই ছিলো অদম্য চেষ্টা যে করে হোক ফাস্ট হতেই হবে৷ কিন্তু এসএসসি পাশ করে সে চলে গেলো ঢাকায় আর আমি ক্লাস সেভেনে থেকে প্রোমোশন নিয়ে নবম শ্রেণিতে৷
মিষ্টি নাহার – কবি,সাহিত্যিক ও সংগঠক।