শিশিরের অশ্রু শিশিরের মতই ঝরছে।
একি শুনল আজ, ইমন ইমন চক্রবর্তী স্বপ্নেও ভাবেনি সে।
এত কথা হয়েছে বংশ পরিচয় জানেনি শিশির।
ইমনের মাঝে অদর্শ আর আন্তরিকতার বিস্তার দেখেছে সবাই।
মনের মাঝে বিশাল ভয়ংকর ঝড় বয়ে যাচ্ছে শিশিরের। পরশু মায়ের মিলাদ আর ইমন স্বরস্বতী পূজা পালন করবে এ যেন বাঁশের শুকনো পাতায় আগুনের মত।
বার বার আফসেট হয়ে যাচ্ছে শিশির।
ইমনের দাপাদাপি বিরল।তুসের আগুনের মত জ্বলছে সে।
ইমনের বার বার মনে হচ্ছিল, বন্যার সাথে পূজার ছুটি কাটানো,পুরোহিতের আশির্বাদ, আর প্রার্থনা শব্দ গুল কত সতন্ত্রভাবে তার মনে দাগ কেটেছে।
এটি কিভাবে সম্ভব, বাবা মা,সমাজ সভ্যতায় কি জবাব দেবে ইমন।
শত শত প্রশ্ন আজ বিদগ্ধ করে চলেছে ইমনকে।
কোন কথা কারো সাথে হয়নি।
সকালে তিতুমির এক্সপ্রেস এ ইমন কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।
আল- হামরা বাস যোগে লালপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হলো শিশিরের।
রাত ঘনিয়ে এসেছে, হয়তো দুজনের অদৃশ্য যন্ত্রনা পীড়িত করে চলেছে।
শিশির বাবা ভাইকে কিছু বলার সাহস হয়নি।
ইমন চক্রবর্তী বড় গম্ভীর, সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা-সাঝে শিশিরের ভাবনায় আপ্লুত।
আজ ভোরটা খুব নিশ্বঃপ্রান। ভোরের শিশির কোথায় যেন আত্নগোপনে।
প্রকৃতি আজ বিষাদ লাগছে।
পাখিরা গান করছেনা। ফুল গুলো কেমন গন্ধ বিহীন লাগছে ইমনের কাছে।
কিছুক্ষন পর সূর্য উঠবে।নতুন সূর্য, এ সূর্য কিরণে ঝলমলিয়ে উঠবে ভুবন।
নতুন সূর্য উঠি উঠি করছে, তুলী রানী ইমনের মা ইমনকে ডেকে তুলে একটা ব্যাগ হাতে ধরে বলছে বাবা তাড়াতাড়ি ৩ কেজি ছাগলের মাংস আন। আজ বাসায় তোর মামা আসবে।
তোর বাবা দোকানে আছে দেখা করে আসিস।
ও হ্যা,মাংস যেন লাল বর্নের হয়।
নতুন সূর্য যখন উঠল, ইমন সাদা রঙের ট্রি- শার্ট পড়ে সাদা এপাসি মোটর বাইক নিয়ে উলিপুর বাজারে ছুটল ১ কি. রাস্তার ব্যবধান।
কিছু দূর যেতেই রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বালু ভর্তি ট্রাক চাপা দিল ইমনকে।
সাদা শার্ট, সাদা বাইক, সাদা বর্নের চেহারা রক্তে রঞ্জিত হলো ইমনের।
দ্রুত উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে এলে ডাক্তার ইমনকে মৃত ঘোষণা করল।
সত্যিই নতুন সূর্য আজ কত রক্তাক্ত।।
আব্দুল মতিন – সম্পাদক, চেতনা বিডি ডটকম