আলো প্রতিবেশী খুশির মাধ্যমে খবর পাঠিয়েছে মিন্টুকে, নদীর ধারে শিমুল তলায় বিকেল পাঁচ টায় দেখা করতে চাই।
কবির মিয়া জয়তুনের বাপের বাড়ি বিকেলে নিমন্ত্রণ করতে যাবে।
এ সুযোগ কাজে লাগাতে চাই আলো।
নিজের মনের লুকানো কথা আজ বলবে মিন্টুকে।
আলো কি ধরনের কথা বলবে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছে মিন্টু।
মিন্টু জীবন যুদ্ধের কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।
অভাবের সংসারে মা বাবার বোঝা আর কবির মিয়ার আত্নিক সহযোগীতা ম্লান করে দেয় তার স্বপ্ন।
শত ভাবনায় জর্জরিত সে।
দেখতে দেখতে বিকেলের রৌদ্রের শক্তিহীন প্রকাশ ঘটছে। নিস্ফল রোদের অপলক চাহনি অদৃষ্ট মাথা ব্যথার কারন রূপে দেখা দিল মিন্টুর জীবনে।
মাত্র দুদিন পর অর্ধফুটা গোলাপের কলি ঝরে পড়বে জীবন বৃক্ষ থেকে।
শিমুল তলায় অরন্যের আড়ালে খুব পাশাপাশি বসে আলো আর মিন্টু। মিন্টু হলুদ গেঞ্জি, লুঙ্গি পড়েছে।কোমরে শক্ত করে বাঁধা লাল গামছা।
মিন্টু বলল, কি জন্যে ভরা বিকেলে আমারে ডেকেছিস বল।
– কাছে থেকেও বুঝস নি, কি চাই? কেন চাই?
পাগলামি করিসনে আলো! পরশু তোর বিয়ে।
এই অসময়ে তোকে আমাকে কেউ এক সাথে দেখলে কি ভাববে বল।
– কাছাকাছি থেকে দেখছি, জ্বালাতন করছি, পিঠে খাওনের সময়টা খুবই সহজে ভুলে গেলি সব।
কি করব বল! তোর ভাই চেয়ারম্যানের পোলার সাথে বিয়ে ঠিক করেছে।
সুখেই থাকবা, আমাকে ভুলে জাসনে যেন।
– হুম ! সবাইকে মনে রাখুম, শুধু তোকে ভুলে যামু।
কাঁপা কাঁপা গলায় বির বির করতে করতে প্রস্থান করল আলো।
আজ সকাল থেকে খুবই বিজি মিন্টু।আজ আলোর বিয়ে,কোন দিক থেকে কোন বিষয়ে কমতি হলে মান সম্মানের প্রশ্ন।
বর চেয়ারম্যানের আদরের পোলা।
সকালের খিচুরি খাবার ধুম পড়ে গেছে।
কবির মিয়া দ্রুত গলায় বলছে,
মিন্টু ! বাবুর্চী যেন বসে না থাকে। 12 টার পরই বিয়ে পৌঁছে যাবে।
দু মগ জল খেয়ে বড় চুলাতে আগুনের মিছিল শুরু করে দিল মিন্টু।
—–চলবে
আব্দুল মতিন- সম্পাদক,চেতনা বিডি ডটকম