কল্পনা বাসার কাউকে কিছু না বলে মাঝ রাতে বেড়িয়ে পড়ল।
সকালে মনোয়ারা বেগম ঘুম থেকে উঠে অবাক হল।
বউমা ডাকলো না! চা দিল না! আর রান্না ঘরে কোন শব্দ নেই। আজকের সকাল তার কাছে অন্য রকম লাগছে।
কল্পনা! কল্পনা! বলে ডাকতে ডাকতে আবিরের ঘরের দিকে এগিয়ে গেল।
না,কল্পনার কোন উপস্থিতির লক্ষণ নেই।
আবির চোখ কচলাতে কচলাতে বের হল।
কিন্তু কল্পনার কোন পাত্তা নেই ! ড্রেসিং টেবিলের দিকে লক্ষ্য করল মনোয়ারা বেগম।
ছোট্ট একটা চিঠি পড়ছে আর কাঁদছে আবিরের মা। চিঠিটা হলো-
আবির,
তোমার জীবনে আমি গুরুত্ব হীন।আমার কোন অবদান তোমার জীবনে নেই।
চোখের ঝলকানিতে আমাকে হয়ত পছন্দ হয়েছিল কিন্তু মন থেকে ভালবাসনি কখনো।
তোমার সফলতায় আমি ভাগ বসাতে চাইনা, তাই তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনা।
ভালবাসা শুধু পাশে থাকাই নয়, তার সুখের জন্য দৃষ্টির বাইরে চলে যাওয়া।
তাই তোমাকে না বলেই তোমার দৃষ্টির বাইরে চলে গেলাম।
ইতি
কল্পনা
মনোয়ারা বেগম ক্ষত বিক্ষত মন নিয়ে চিঠি খানা আবিরকে দিল।
সিঁড়ি বেয়ে নামতেই পা পিছলে পড়ে গেল আবিরের মা, সেন্স হারানো অবস্থায় হাসপাতালে নিল মনোয়ারা বেগমকে।
সকাল ৯ টা ৩০ ডাক্তার আবিরকে তার মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত খবর দিল। অকাঙ্খিত মৃত্যুর সংবাদে উন্মাদ হয়ে পড়ল আবির।
১ দিন পরই রাতের ১২ টায় ফোন পেল আবির অফিস ( ভিজুয়াল সেন্টার) থেকে স্যার আপনার অফিস সহ তিন তলা পর্যন্ত আগুন ধরেছে।
খুব বেশি মনে পড়ছিল কল্পনা কে। আবির বাউসাতে ছুটে এলো,কিন্তু কল্পনা বাউসাতে আসেনি। আবিরের মায়ের কথা খুব মনে পড়ছিল আবিরের।
কল্পনা ঘরের লক্ষ্মী! বিধাতার নির্মম সিদ্ধান্তে আবির অপরাধী। যত দুর সম্ভব কল্পনার খোঁজ করা হলো কিন্তু কোথাও জীবন সংসারের মহারানী নিয়তি কন্যা কল্পনাকে খুজে পেলনা আবির। নিয়তির নির্মম আঘাতে আহত আবির।
ঠিক মত সময় কভার করতে না পারায় গান শুটিং বন্ধ হলো আবিরের। তাই আজও নিয়তির পানে চেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে সেই পথিতযশা শিল্পী।
আব্দুল মতিন –
সম্পাদক, চেতনাবিডি ডটকম
সমাপ্ত