আজ ডাক্তার পিয়াসার পোস্টমার্টেম। সকাল থেকে হাসপাতালে অপেক্ষমাণ ওর পরিবারের সবাই। গতকাল ছিলো ওর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শেষে ব্যাবসায়ী হবু জামাই নাবিলের ফোন পিয়াসার কাছে।
” তুমি দ্রুত বের হও আমারা ঘুরতে যাবো”
পিয়াসা অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও বের হলো বোন আর দুলাভাই কে সঙ্গে নিয়ে। এ বিয়েতে সম্মতি ছিলোনা পিয়াসার।
তবুও বড়লোক বাবা ব্যবসায়ী পাত্র ঠিক করেছেন আর তাছাড়া পিয়াসা পছন্দ করতো ডাঃ শিহাব কে। শিহাব ও ওকে পছন্দ করতো কিন্তু শিহাবের আম্মুর সম্মতি ছিলোনা কারণ পিয়াসার পরিবারের ছিলো টাকা ওয়ালা কিন্তু অশিক্ষিত।তাই মেনে নিতে পারেনি।
পিয়াসা ছিলো রুপবতী এবং গুণবতী। মেডিকেলে পড়ার সময় ডাক্তার শিহাবের সাথে পরিচিত।
সেই থেকে দুজনের ভিতর বন্ধুত্ব। ডাঃ শিহাব একদিন ওর মায়ের কাছে পিয়াসার কথা বলতেই উনি চিনে যান তার পরিবারকে। শিহাবের নানা ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং নিজের একটা কোম্পানির চেয়ারম্যান। পিয়াসার বাবা একসময় ওর নানুর কোম্পানিতে কাজ করতো।
অগত্যা বিষয়টি জানার পর শিহাবের মা ছেলের জন্য পাত্রী খুঁজতে থাকেন। দ্রুত পেয়েও যান নিজের দুর সম্পর্কের ভাই ব্যাংকের ডাইরেক্টর এর ইঞ্জিনিয়ার মেয়ে।
সুন্দরী স্মার্ট তানিয়া। এক পর্যায়ে ছেলেকে বলেন বিয়ের কথা ছেলে বলে এখনই বিয়ে করবেনা।
এভাবেই কয়েক মাস কেটে যায়। শিহাবের আম্মু ছেলেকে বুঝিয়ে রাজি করালেও মন থেকে শিহাব মেনে নিতে পারছিলোনা।
শিহাবের আম্মু একজন লেখিকা ও শিল্পী । শিক্ষিত স্মার্ট। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক কিছু উপলব্ধি করতে পেরেছেন। নিজে শিক্ষিত হয়েও চাকুরী করা হয়ে ওঠেনি। কারণ শিহাবের বাবা ও সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন।
তিনি চাইতেন না ঘরের সুন্দরী বৌ বাইরে যেয়ে চাকুরী করুক। বিজ্ঞানের ছাত্রী হয়ে ও লেখাপড়া শেষ করতে হয় বাংলায় এবং শেষ পযর্ন্ত লেখালেখিতেই নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। ভদ্রমহিলা বাস্তব জীবনের সাথে এতো পরীক্ষিত হয়েও নিজে কেনো ছেলের জীবনের একটা অংশ কে এভাবে অস্বীকৃত দিলেন আসলে সেটা বোধগম্য নয়। তবে এতোদিনে নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছেন ছোট্ট এই জীবনে আত্ম অহংকার কতোটা কষ্টের।
শিহাবের বিয়ের কথা একরকম পাকাপোক্ত করে ফেললেন ওর আম্মু।
(চলবে….)
পারভীন আকতার পারু – সহ সম্পাদক, চেতনা বিডি ডটকম।