মুক্তির বাবা গভীর প্রেমে বিভোর হয়ে তার মাকে বিয়ে করেছিল ২৮বছর পূর্বে। প্রেম-ভালোবাসায় নাকি পরম শান্তি, সুখ-সমৃদ্ধি। প্রেমের কারণে শত শত এমনকি হাজার হাজার মাইল দূর থেকে কখনো কখনো প্রেমিক -প্রেমিকা ছুটে আসে ।
নতুন জীবন গড়ার বাসনায় কেউ দিয়ে যাচ্ছে মিথ্যে সান্তনা,কেউ অভিনয় করছে আবার কেউবা করছে প্রতারণা।জীবন কতইনা বৈচিত্র্যময়।প্রেম ভালোবাসার কারণে কত বড় বড় ইতিহাস রচিত হয়েছে,জীবনে কত উত্থান-পতন ঘটেছে তার ইয়ত্তা নেই ।
আধুনিক যুগের প্রেম-ভালোবাসা একটি স্টাইল, যেখানে কেউ জীবনের মানে খুঁজে পায়না। কেউ কাউকে না বোঝে না, সুখে দুঃখে পাশে থাকতে পারে না। এইতো দুদিন আগে নদীর পাশ দিয়ে যখন হাঁটছিলাম একটি শালিক মাথা নুইয়ে পড়ায় আরেকটি শালিকের ছটফটানি, দিগবিদিক উড়াউড়ি আন্দোলিত করেছিল মনকে। দূর থেকে দেখলাম মৃতপ্রায় এই শাকিলের মুখে সঙ্গী শালিকটা কখনো পানি,কখনও খাবার তুলে দিচ্ছে। ঠোঁটটা নিয়ে যাচ্ছে কখনো কখনো তার ঠোটের খুব কাছে । কত মায়া কত ভালোবাসা জড়িয়ে আছে তাদের বোঝায় যায়না।
যাইহোক প্রেম ভালোবাসার নিবিড় ছায়া বেশিদিন স্থায়ী হয়নি মুক্তির বাবা – মার, তিন বছরের মাথায় মুক্তির মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
সমাজ জীবনে এমন ঘটনা অহরহ পরিলক্ষিত হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর প্রভাব কলুষিত করে পরিবার আর ব্যাক্তিজীবন।বিবাহ বিচ্ছেদের পর বেশ কয়েক বছর অপেক্ষা করেছিল মুক্তির মা। পরিবার ও পরিবেশের কারণে মুক্তিকে থাকতে হয়েছিল নানির বাসায়।এরমধ্যে নানার মৃত্যু ঘটে। নানি এবং মামারা অতি যত্নে মুক্তিকে লালন পালন করেছে।
অল্প সময় পরি মুক্তির মায়ের অন্যত্র বিবাহ হয়েছে।বাবা এবং মা কে ছাড়াই মুক্তির চলছে অনেক সময়। কতটা গভীর আর মনোকষ্টে বেড়ে উঠেছে মুক্তি তা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।
মুক্তির মায়ের বিয়ের পর প্রবল জিদে পড়ে বাবা আরেকটি বিবাহ করে।
এ যেন ঐ গানের কথার মতই সত্য-
“আজ দুজনার দুটি পথ দুটি দিকে গেছে বেঁকে।”
এভাবেই চলছিল বেশ কিছুদিন, মুক্তি বড় হয়ে উঠলো মামা বাড়ি থেকেই। মা,মামা আর নানীর তত্ত্বাবধানে বিয়ে হলো যদিও বাবা অনেকটাই জানতো।
পরিবারের ছোটখাটো কথা বাবা জানার চেষ্টা করেছিল।সময়ের হাত ধরে মুক্তির বিয়ের পর সৎ মায়ের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বাবা -মা আর অভিভাবকহীন জীবন নিয়ে অতিবাহিত করছে মুক্তি দিনের পর দিন।মুক্তির এখনো সন্তান হয়নি বিয়ের ৮ /৯বছর পেরিয়ে গেছে এর মধ্যেই হঠাৎ মুক্তির বাবার স্টক করে মৃত্যু ঘটে।
মুক্তির মায়ের বিবাহ হয়েছে বড় পরিবারের সেখানে তার অনেক দায়িত্ব।
সৎ মা অন্যত্র সংসার পেতেছে।
বাবার মৃত্যু হয়েছে, সৎ ছেলে সন্তান অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে। সময়ের চাকা ধরে এক মুঠো সুখ খুঁজে বেড়াচ্ছে- মুক্তি, মুক্তির দুই মা, এমনকি মুক্তির সৎ ভাই।
সংসার ও পরিবার জীবনের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অনেক বড় বড় দুঃখ কষ্ট কেও হার মানায়।
আব্দুল মতিন-সম্পাদক,চেতনা বিডি ডটকম