“রোজা মানে তো সংযম তাই না আম্মু ”
মহিমা তার মাকে জিজ্ঞেস করলো।
মা তখন ইফতারি বানাচ্ছে। বললো, হ্যা মা।রোজা মানে হচ্ছে সংযম করা।
আমরা যে সারাদিন আমাদের এতো খাবার থাকতেও না খেয়ে থাকি এটাই সংযম তাই না আম্মু।
বাঃ খুব ভালো বুঝতে পেরেছো তুমি। কিন্তু সংযম বা রোজা কিন্তু এতটুকুতে সীমাবদ্ধ না।এর অর্থ আরও ব্যাপক।
এছাড়াও আরো অর্থ আছে আম্মু?
হ্যা আম্মু। যেমন মনে করো রোজা রেখে তুমি কোন বাজে কথা বলতে পারবে না।কোন মিথ্যা কথাও বলতে পারবে না।
আচ্ছা আম্মু আমি কি আজ সকাল থেকে একটাও খারাপ কথা বা মিথ্যা কথা বলেছি?
না বলনি। তবে তুমি তোমার ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করেছিলে রিমোট নিয়ে মনে আছে?
হ্যা।কিন্তু আমি তো মিথ্যা বা খারাপ কথা বলিনি।
কিন্তু রোজাদার ব্যক্তি ঝগড়াঝাটিও করতে পারবে না।সেখানেও সংযত থাকতে হবে। কারো সাথে কোনো কিছু নিয়ে ঝগড়া লেগে গেলে বলতে হবে, আমি তোমার সাথে তর্ক করছি না,কারণ আমি রোজা। রোজা রেখে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে তওবা করতে হয়, আল্লাহর জিকির করতে হয়
আর বেশি বেশি সিজদাহ্ করে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করতে হয়।
আচ্ছা আম্মু আমি তো এখন জেনেছি ঝগড়া করা যাবে না। আমি যদি তওবা করি আর কখনো রোজা রেখে ঝগড়া করবো না তবে কি আমার রোজা হবে।
অবশ্যই হবে। আল্লাহ ক্ষমাশীল।তওবাকারী তওবা করে যদি আর কখনো ঐ কাজ না করে তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।
মহিমার বাবা অনেক গুলো বাজার নিয়ে বাসায় ঢুকলেন আর বলতে লাগলেন, রোজাও শুরু হলো আর জিনিস পত্রের দামও দ্বিগুণ হয়ে গেল। সব ফলের দাম বাড়িয়ে দিল।মনে হয় যেন রোজার মাস না এটা ব্যাবসার মাস।
ওমনি মহিমার প্রশ্ন, কেন বাবা রোজার মাসে ব্যাবসা করা যাবে না?
যাবে মা।তবে অন্যান্য মাসে যেমন দাম ছিল তেমনই রাখতে হবে। আমাদের দেশে একদল অসৎ লোক প্রয়োজনীয় জিনিস মজুদ রেখে জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়। ঘুস খায়, সুদ খায়। এসব করলে রোজা হয় না। রোজা রাখা মানে সব ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা।
বুঝতে পেরেছি শুধু না খেয়ে থাকাকে রোজা বলে না। রোজা থাকলে সব ধরনের খারাপ কাজ থেকেই বিরত থাকতে হবে বা সংযত থাকতে হবে।
হুম। আর সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্নও থাকতে হবে। চলো আমরা এখন অজু করে ইফতারী গুলো টেবিলে সাজিয়ে ইফতারির জন্য রেডি হই।
কহিনূর –
কবি ও সাহিত্যিক