মায়ার সাথে প্রথম পরিচয় হয়েছিল ধুমকেতু এক্সপ্রেসে।
রাত সোয়া এগারোটায় রাজশাহী স্টেশনে ৫ নং প্লাটফর্মে একটু বসলাম।
ঢাকার উদ্দেশ্য এ ট্রেন ছাড়ার রাইট টাইম আর ১০ মি পর।
আমি পতেঙ্গা যাবো। প্রথমে ঢাকা, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সেখান থেকে আবার মূল গন্তব্যে।
আমি প্লাটফর্মে বসে ফ্রেসবুকে নোটিফিকেশন চেক করছিলাম।
মায়া এসে আমার ব্যাগ ঘেঁষে বসল। হাতে একটা লম্বা হাতল ফিতার ব্যাগ, একটা ভালো মোবাইল, আর ভারী মসৃণ ওড়না।
ট্রেন ২০ মিনিট লেট, হাতে এখনো প্রায় পঁচিশ মিনিট।
হঠাৎ রত্নার ফোন এলো,
– স্যার কেমন আছেন?
হা, আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি?
– জ্বি, ভালো। ভাইয়ার গলা ব্যথা কমেনি। মা, বাসার সবাই ভালো মোটামুটি।
বেশ, কিছু লিখছ?
– জ্বি, একটা কবিতা লিখছি। ঠিক আছে কিনা যদি চেক করে দিতেন।
আচ্ছা, দেখব।
রত্না আমাদের সাহিত্য ভুবনে একজন বলিষ্ঠ কবি।
সংক্ষিপ্ত সময় কথাতেই মায়া আমার দিকে কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকালো।
জুম করে একটা গল্প পড়ছিলাম, কামিনী – গল্পটা লিখেছেন, হুমায়ুন আহমেদ।
ধুমকেতুর বাঁশি বেজে উঠল।
চ- ২২ কামরায় আমার আসন নির্ধারণ করা হয়েছে।
খুঁজে খুঁজে নিজের আসনে এসে বসলাম।
২ মিনিট পরে চ- ২১ মায়া এসে পড়ল। আমি ডাব্লিউতে,দীর্ঘ যাত্রায় জানালা না পেলে কিছুটা সমস্যা হয় বটে অক্সিজেন কম থাকে।
যাইহোক, সবার সুবিধা বিবেচানায় রাখতে হয়।
এবার প্রথম মায়া আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,
– ভাই কোথায় যাবেন?
আমি আগে ঢাকায় এরপর চট্টগ্রামের পতেঙ্গা।
-ও আচ্ছা! কি করেন আপনি জানতে পারি?
জ্বি, কেন নয়! আমি একজন শিক্ষক।
যাত্রা শুরু হলো।
আজ কেমন যেন অসস্তি বোধ করছি, মনে হচ্ছে কোন কাজই আজ ঠিকঠাক করতে পারিনি।
মা বলেছিল, দু দিন পরে যাস!
পেয়ারা বাগানেও আজ যেতে পারি নি।
বড় ভাইয়ের অনুরোধে আজ অপরিকল্পিত ভাবে পতেঙ্গা যেতে হচ্ছে।
মায়াকে জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় আপনার বাসা আর কি করেন??
– আমার বাসা গাজীপুরে, আর এবার এমবিবিএস শেষ করতে যাচ্ছি।
……(চলবে)
আব্দুল মতিন-সম্পাদক,চেতনা বিডি ডঠ কম