চোখ মেলার পর থেমে গেল শেষ আর্তনাদটুকুও, নামল একটা ভারী নৈঃশব্দ্য ,বাগানের তাজা সূর্যমুখী ফুলগুলোর উপর দিয়ে যেন এক ডজন দৈত্য রাতভর ধ্বংস চালিয়েছে।
মেয়েটি খুব কষ্টে উঠে বসল ,ধীরে ধীরে ব্যথাগুলো মুছে ফেলার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখল দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে রক্ত গড়িয়ে নামছে। দাঁড়াতে চেষ্টা করল, অনেক কষ্টে ধীরে ধীরে টলতে টলতে এগোচ্ছে, সামনেই শারদের পূর্ণগর্ভা টলটলে পদ্ম পুকুর।
পোশাকের সামান্যঅবশিষ্ট যেটুকু শরীরে লেগে ছিল তা রক্ত ঘামে মাখামাখি। ধীরে ধীরে পুকুরে নেমে ক্ষত বিক্ষত দেহটা ভিজিয়ে নিল। খুঁটে খুঁটে তুলে ফেলল সমস্ত পার্থিব ক্লেদ, যেন সত্যি সব ধুয়ে ফেলছে।
সামাজিক ও প্রাকৃতিক দ্বন্দের টানা পোড়েনে রাত্রির বুকে কালো ছোপ দাগ, আকাশ জুড়ে দাপুটে মেঘমল্লার আর সাথে প্রতিপদের আবছা চাঁদটুকু…
ঘাট থেকে উঠে এলো, এখন সে সম্পূর্ণ নগ্ন। শান্ত তার দু’টি চোখ, শূন্য ঘরের ভিতর ঢুকে মনে হল গায়ে চাপা দেওয়ার জন্য কিছু একটা দরকার শীত শীত করছে ,ঘরের চারদিকে তাকালো …
তখনই পুরুষটির শশব্যস্ত আবির্ভাব , সে লীনেনের একটা নরম চাদর মেয়েটির শরীরে জড়িয়ে দিল,বুকের কাছে চেপে পরম স্নেহে মধুর স্বরে বলতে থাকল আমার ভুল হয়ে গেছে বড্ড, তোমাকে একা রেখে যাওয়াটা ঠিক হয়নি, এখন তো এসে গেছি আর ভয় নেই “রূ”
মেয়েটি শুনতে পেল কিনা কেউ জানেনা! সে কথা বলল না , ফুঁপিয়ে কাঁদল না শুধু চোখ দুটো বুজে রইল…
সোনালী মণ্ডল আইচ- কবি ও সাহিত্যিক।