আমাদের আশপাশের অনেককেই দেখি নিজের বাচ্চার অপরাধকে, ভুলকে ভুল বা অপরাধ বলে মনেই করেন না।কিন্তু অন্যর বাচ্চার সামান্য ভুলকে বিশাল করে তোলেন।অন্যর বাচ্চাকে অপমান করতে,শাসন করতে মাঠে নেমে যান।
সেই সব অশিক্ষিত, অভদ্র( প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকলেই সবাইকে আমি শিক্ষিত,ভদ্র বলি না।দুঃখিত) অভিভাবককে বলব, সময় সব কিছু ফিরিয়ে দেয় জনাব,জনাবা।আজ যে বাচ্চাকে অকারণে সবার সামনে ছোট করলেন,অপমানিত করলেন।ভবিষ্যতে আপনার বাচ্চা এরচেয়ে ভয়াবহ অপমানের মধ্য পড়বে।আপনি হয়ত জানবেনও না।কিন্তু ঐ যে ওপরে যিনি আছেন তিনি কিন্তু সব কিছুর হিসাব রাখেন।
নিজের দেখা একটা ঘটনা বলি,” একবার এক আন্টির বাসায় তার মেয়ের বান্ধবি বেড়াতে এসেছে।তাকে পিঠা খেতে দেওয়া হয়েছে।গল্প করতে করতে পিঠার প্লেট থেকে বেশ কয়েকটা পিঠা নিচে পরে যায়।ক্লাস সেভেন,এইটে পড়া বাচ্চা মেয়ে স্বভাবতই বেশ লজ্জা পেয়ে, পরে যাওয়া পিঠা প্লেটেই তুলে রাখে। ব্যাপারটা আন্টি দেখে ফেলেন।মেয়েটি চলে যাবার পর আন্টি খুব রাগারাগি করছিলেন,'”এত বড় মেয়ে মেঝেতে পরে যাওয়া পিঠা তুলে রাখছে।এখন বাকি পিঠা কে খাবে? বাপ মা এদের কিছু শেখায় না? ইত্যাদি ইত্যাদি… ”
আমি আন্টিকে শুধু একটা কথাই বলেছিলাম,” আন্টি ও তো পুষ্পের সাথেই পড়ে।কত আর বড়। পুষ্পও এমন ভুল অন্যর বাসায় গিয়ে করতে পারে।তখন আন্টি চুপ হয়ে যায়।
আর এক ঘটনা বলি,” এক বাচ্চা বাথরুমের লাইট জ্বালিয়ে রেখে এসেছে। সেই বাচ্চাকে সবার সামনে এত অপমান করলেন অন্য এক বাচ্চার মা কি বলব।
এমন অসংখ্য ঘটনা, অসংখ্য পরিস্থিতি আমি ছোটদের ছোট করতে দেখেছি বড়দের।
“আমার বাচ্চা নাদান শিশু।আর জগতের সব বাচ্চাই বড়,সব বাচ্চাই দুনিয়ার খারাপ”… এমন মানুসিকতা থেকে বের হয়ে আসুন।
আজ অন্যর বাচ্চাকে ইটকেল মারবেন, পাটকেল ভবিষ্যতে আপনার জন্য,আপনার বাচ্চার জন্য অপেক্ষা করছে।
অন্যর বাচ্চাকে ততটুকুই শাসন, ততটুকুই সমালোচনা করুন, যতটুকু শাসন অন্য কেউ আপনার বাচ্চাকে করলে আপনার খারাপ লাগবে না।
ভালো ব্যবহার করা, একজন মানুষের মানবিক গুণাবলীর অন্যতম গুণ বলে আমি মনে করি।
নিজের ভেতরের হিংসা,রাগ সবাইকে নগ্ন ভাবে না দেখানই ভালো কি বলেন?
সেলিনা রহমান শেলী- কবি ও সাহিত্যিক।