আমি বিকেলে যখন হাঁটি তখন সূর্য যেন আমার সাথে সাথে যায়। আমিও যাই সূর্য যায়, বিকেলের সূর্যের রোদের তেজ কমা দেখে আমি ভাবতে থাকি। হাই ,সূর্য যখন সকালে উঠে তার পর সময় যত যায় এর তেজ ততই বাড়তে থাকে। দিনের মধ্যভাগে এর তেজ বেড়ে যেন দ্বিগুণ হয়ে যায় ।এর উত্তাপে ক্লান্ত হয়ে যায় পথিকেরা। কিন্তু হায় !বিকেল হলেই এই সূর্যের তাপ কমতে থাকে যত বেলা গড়াই ততোই এর তেজ কমতে থাকে। শেষ পর্যন্ত নিজের সবটুকু তেজ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গোলাকার রক্তের পিন্ডে পরিণত হয়। বিদায় মুহূর্তে প্রকৃতির উপর যেন সিঁদুরের আবির ছড়িয়ে দেয়। তখন প্রকৃতিটা দেখতে কি যে অপরুপ লাগে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমি তাকিয়ে থাকি এক দৃষ্টিতে ,ভাবি এটাইতো সেই উত্তপ্ত সূর্য যার চোখে চোখ রাখা যায়নি। অথচ বিকেলবেলা তার সবটুকু তেজ হারিয়ে নিথর দেহে ফিরে যাচ্ছে ওপারে। আস্তে আস্তে চারপাশ ঝাপসা হয়ে আসে আমার চোখের সামনে। হারিয়ে যায় আমার চোখের সামনে সেই গোল রক্ত পিণ্ড টি। আমার খুব খারাপ লাগলো।আমাদের জীবন থেকে একটি একটি করে বছর হারিয়ে যায়। আর ফিরে আসে না। বছর গুনতে গুনতে একসময় আমরাও টগবগে তরুণ যুবক-যুবতী হয়ে পৃথিবীর বুকে বিচরণ করি। মধ্য বয়সের পর যত বছর কেটে যায়, ঠিক বিকেলের সূর্যের মতো আমাদের তেজটাও আস্তে আস্তে কমতে থাকে। আমরা ও সব তেজ হারিয়ে নিথর দেহ নিয়ে ফিরে যাই পরপারে। আমাদের জীবনে তখন আর নতুন সূর্য ওঠেনা, নতুন বছর ও আসে না, বছর শেষ ও হয়না। শুধু আমরা পৃথিবীতে কয়েকটা বছর গুনে গুনে প্রকৃতির খেলায় মেতে থাকি।
শাহিদা খানম –
কবি সাহিত্যিক ও শিক্ষিকা