রাজা ধনী পরিবারের বুদ্ধিমান চৌকস ছেলে। বাবা শিল্পপতি, নামি-দামি মানুষ। বড় একটা প্রাইভেট ফার্মে একাউন্টসে জব শুরু হলো রাজার।পড়াশোনা উচ্চতর লেভেলের শেষের দিকে। অবসরে গান শেখার বড্ড শখ।
গাড়িয়াহাটার মোড় থেকে খুব নিকটে সুনীল দাদার তত্ত্বাবধানে গানের রিহার্সাল। প্রথম দিনে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়ে ছিল পাঁচ মিনিট লেট বলে।
সুনীল দাদার গলা একদম সুর বসানো।
প্রথম দিনে একটি সুঠাম মেয়ে, সাদাসিধা হলেও বেশ শৌখিন আর দক্ষ সে। মেয়েটির নাম বুলবুলি।
সুনীল দার বাজানো হারমনিয়াম আর বুলবুলির গান -“জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ, ধন্য হল ধন্য হল মানব জীবন।”
গানটা শোনার পরে রাজার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো।
এত চিকন গলায় জলতরঙ্গের মত বুলবুলির গান হৃদয় কেমন যেন শিহরণ লাগছে তার।
রূপের বোন আর বিজুর ভাইঝি হলো বুলবুলি।
রূপের মেধা বিচক্ষণতা আর বিজুর দাপট দিয়ে চলে সেই এলাকা।
রাজার পরম বন্ধু নাড়িদা।
বিজু দাপট দিয়ে চলে বলে অনেকেই তাকে ভয়ে এড়িয়ে চলে। রূপ কে রাজা চিনত অন্য ভাবে, রূপ কিছুটা বয়সে বড়। কলেজে ভর্তি, পড়াশোনা, পরীক্ষা সব মিলিয়ে রূপের সাহায্য পায়নি এমন ছেলে খুব কমই আছে।
গান শেখার চেষ্টা আর মিষ্টি চেহারা, দুষ্টু হাসি, পাতলা ওড়না, পাতলা গড়ন এমনকি পাতলা গলার খুব ভক্ত হয়ে যায় রাজা।
রবীন্দ্র সংগীতে বুলবুলির কাছে যাবার যো কারো ছিল না।
“রাঙা পদযুগে প্রণমি গো ভবতারা…..।”
“চোখের আলোয় দেখেছিলেম, চোখের বাহিরে……। ”
” সখী আঁধারে একেলা ঘরে মন মানে না…..।”
গানগুলো বেশ দাগ কাটে রাজার হৃদয়ে।
রাজা নাট্য থিয়েটারে খুব পারর্দশী ছিল।
ইতিমধ্যে রবীন্দ্রনাথের রবিবার গল্পাবম্বনে নাটক মঞ্চস্থ হবে নিউ এম্পায়ারে। অসাধারণ রোমান্টিক নাটক নিদের্শনায় শ্রীমতী শান্তিশ্রী নাগ।
রাজার অভিনয় সেরা হলো। এ নাটকে গান উপস্থাপন করে বুলবুলি।
এখন বুলবুলির দর্শন ছাড়া রাজার খুব খারাপ লাগে।
তাই কারণে অকারণে বুলবুলির সাথে দেখা করতে নানা উপায় খুঁজে রাজা।
মন্দিরা সেন, সলিল সেন,চিত্ত বসু, উত্তম কুমার, শান্তিদি আরো অনেকের সাথে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয় রাজা তথা লেখকের সঙ্গে।
কিছু নিরবচ্ছিন্ন ঘটনা রাজাও বুলবুলির সম্পর্কে সিথিল হয় এবং গল্পের শেষে মিলনের সুখে আচ্ছাদিত হয় তাদের জীবন।
এ গল্পের বইয়ে- সম্পর্ক, আচরণ, অধ্যবসয়, সাহিত্য প্রেম,বিরহ, দায়িত্বশীল আচরণ সুন্দর ভাবে উঠে এসেছে।
আব্দুল মতিন_ সম্পাদক,চেতনা বিডি ডটকম