Take a fresh look at your lifestyle.

ক্যান্সার – চার

811

এখন বলব এই ভয়ংকর পরিস্থিতির শিকার ও মুক্তি পেয়েছেন যারা তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা। হয়ত এতে উপকৃত হবেন আশা নিয়েই লিখছি। ক্যান্সারের মুখোমুখি হয়ে তাকে প্রতিহত করার মনোবল যাদের আছে, রোগ মুক্তির পথ ও তাদের জন্যে অনেকটাই খোলা আছে। আর সেই পথটি পেতে হলে আমার/আমাদের অর্থাৎ রোগীর করণীয় বিষয়গুলি সঙ্কিপ্তভাবে বলছি। আমাদের মতো এমন রোগীদের কিংবা এ রোগ থেকে বেঁচে যাওয়া রোগীদের কিছু করণীয় অভ্যাস গড়ে তোলার নিয়ম; এটি আমার অভিজ্ঞতার ছোঁয়া ও সেই সাথে ক্যান্সার সেলিব্রেটি “ডঃ ইয়ান গ্যালার “ এর ক্যান্সার বিজয় বইটির সাহায্য নিয়ে লিখা। (উনি নিজেও একজন ক্যান্সার বিজয়ী ছিলেন)। করনীয় বিষয়গুলোর মধ্যে খুব সহজে অভ্যাস করার মত বিষয়ের ১মটি হলোঃ
১। আশাবাদীঃ এই শব্দটি বা এই ধাপটি ভূক্তভোগী নিজে নিতে হবে। কেবল তখনি বাকি পথ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়ে যাবে। আমাকে ভাবতে হবে আমি সুস্থ আছি ইনশাহ আল্লাহ । ডাক্তারের উপর নিজেকে একদম ছেড়ে দেয়া নয়। ডাক্তারের পরামর্শকে সুস্থতার একটা অংশ মাত্র মনে করে জেনে নিতে পারেন এই অবস্থায় আমার করনীয় কি? সব বিষয়ে জেনে নিয়ে সিদ্ধান্ত আপনিই নিবেন। নিজের মনোবল রেখে ভাবুন এটা এমন কি আমিতো সুস্থ হতেও পারি । স্বরণ করুন সৃষ্টিকর্তাকে। প্রয়োজনীয় ঔষধ ঠিকমত সেবন করুন।
২। ধ্যানঃ রোগমুক্ত হয়ে সুস্বাস্থের অধিকারী হওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী একটি উপায় হলো ধ্যান করা। সুস্বাস্থ্যের মূল উপকরণগুলো এর থেকে পাওয়া সম্ভব। এর প্রত্যক্ষ্য প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে দৈহিক চাপের নিরসন থেকে শুরু করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পূণরুজ্জীবিত করা। মন ও মেজাজের ভারসাম্য বজায় রাখা, ইতিবাচক মানসিকতার সৃষ্টি করা, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ও সহজে বর্ধিত সুস্থতাবোধ এনে দেয়া। এসবকিছু ধ্যান অভ্যাসের সহায়তায় সম্ভবপর ।
৩) মনোবলঃ অক্রিয় ধ্যান কাজ করে সূক্ষভাবে। সহজ ও স্বয়ংক্রিয় এর অগ্রগতি । ধ্যানের সুফল ভোগ করার উপায় বিভিন্ন কৌশল নিয়মিত প্রয়োগই সক্রিয়ভাবে ইতিবাচক চিন্তার উপকারিতা কাজে লাগান এবং উপযুক্ত পথ্য মেনে চলা – এই দুই পদ্ধতির সাথে একজোটে ধ্যান কিভাবে করতে হয় তা কম বেশি সকলের জানা বলে আমি মনে করি। তারপরও সব পদ্ধতি আলোচনা না করে বিশেষ বিশেষ দু একটি দিচ্ছি যা আমি ব্যক্তিগতভাবে জানলেও বিভিন্ন সোর্সা এবং উল্লেখিত বইটি থেকে সংগৃহীত কিছু পদ্ধতি শেয়ার করছি।
ক) পূর্ণ মনোযোগঃ ধ্যা্নগ্রাহী একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে আসন গ্রহন করে, শরীরের শীথিলতা যত বেশী সম্ভব আনবেন এবং কোন একটি বিষয়বস্তুর ওপর পূর্ণ মনোযোগ নিবদ্ধ করবেন/ শিথিলতা ও মনোযোগ পরস্পরের প্রতিপূরক হিসেবে কাজ করবে। কোন একটি প্রক্রিয়া যেমনঃ – শ্বাস-প্রশ্বাস এব্যাপারে বহুল পরিচিত।
খ) কোন একটি শব্দ সাধারণতঃ কোন এক শব্দের ক্রমাগত পূণরাবৃত্তি করা যেতে পারে। এটা সংখ্যায় হতে পারে শূন্য থেকে ১০০ অথবা ১০০ থেকে শুন্য। অথবা আপনার ধর্মীয় শব্দ যার যার ধর্মের মন্ত্র । মুসলমানদের জন্য হতে পারে ইয়া আল্লাহু, ইয়া রাহমানু এমন আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহের মধ্যে থেকে যে কোন পবিত্র একটি নাম এক ধ্যানে নিশ্বাস গ্রহন ও ত্যাগ করতে নীরবে অথবা সজোরে করতে পারেন।
গ) কোন বিশেষ চিন্তা যেমনঃ সততা, সত্যবাদিতা, ন্যায়বিচার ইত্যাদির উপর মনোযোগ নিবিষ্ট করা। মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু যাই হউক না কেন, অন্য সমস্ত চিন্তা মন থেকে দূর করে কেবল সেই বিষয়টির ওপর মনোনিবেশ করা হবে এর উদ্দেশ্য। একবার এই লক্ষ্যে পৌছাতে পারলে ধ্যানের সূচনা ঘটে। ধৈর্য্য ধারন করা; শরীর ও মনকে অব্যহতি দেয়া, যাতে করে এই সুফল আমাদের জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে।
সক্রীয় মন আমাদের বিশাল ও বাস্তব সম্পদের সন্ধান দিতে পারে। মনোবল আমাদের ভাবনার বস্তুকে বাস্তবে রুপ দিতে পারে। এ ব্যাপারে মনোবল অত্যন্ত ফল্প্রসু ও বৈষম্যহীন। এটা যেমন সম্পূর্নভাবে আমাদের চেষ্টার সাফল্য এনে দিতে পারে। তেমনি পারে সুস্থ থাকার প্রেরণা যোগাতে। যুক্তরাজ্যের গভেষকদের এক গভেষণার ফলাফলে জানা গেছে ইতিবাচক দৃষ্টিভংগী সম্পন্ন ক্যান্সার রোগীরা, যারা বাঁচতে চান, তাঁরাই বাঁচেন। তারা একই সংগের হোতাশাপ্রবন রোগীদের চেয়ে বেশিদিন বেঁচে থাকেন । দেখা গেছে নেতিবাচক রোগীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চকৃষ্ট চিকিৎসা ও ব্যর্থ হয়।

রওশন চৌধুরী- সহ সম্পাদক চেতনা বিডি ডটকম।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.