Take a fresh look at your lifestyle.

ক্যান্সার পর্ব- তেইশ

738

গত পর্ব শেষ করেছিলাম লাঞ্জ ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে কিছু বর্ণ্না দিয়ে। আজ এই লক্ষনগুলোর বাকি অংশ এবং নিরূপণ ও এর সুত্রপাত কিভাবে হয়ে থাকে তার একটি প্রাথমিক ধারণা ও চিকিৎসা নিয়ে কিছু লিখবো ।
লক্ষণঃ বুক ব্যথাঃ প্রায় 30% থেকে 35% ফুসফুস ক্যান্সারের রোগীর ক্ষেত্রে এই লক্ষণটি দেখা যায়। টিউমার ফুসফু ঝিল্লী (Lung membrane) এর আশপাশে হলে মাঝে মাঝে হালকা বুক ব্যথা হয়ে থাকে, কিন্তু টিউমারটি যদি ফুসফুস ঝিল্লী বা প্লিউরা (Lung membrane or pleura) ভেদ করে তাহলে অনবরত বুকে ব্যথা থাকে।
জ্বরঃ ক্যান্সারের প্রদাহের কারণে জ্বর হয়ে থাকে এবং শরীরের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি এর নিচে থাকে। এক্ষেত্রে কোন Antibiotics ও কাজ করে না এবং বার বার জ্বর আসতে থাকে।
বুক ব্যথা এবং শ্বাস-কষ্টঃ ক্যান্সারের কারণ ফুসফুস শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে প্রচন্ড শ্বাস কষ্ট হয়।
আঙুল ফুলে যাওয়াঃ এক্ষেত্রে আঙুল ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়। বিশেষ করে আঙুলের গোঁড়ার দিক এবং নখের চারপাশ ফুলে যায়।
বাতঃ শরীরের জোড়া বা গাঁট যেমন হাঁটু,কনুই,কব্জি ইত্যাদিতে ব্যথা হতে পারে। এমনকি ব্যথার কারণে হাত নাড়তে করতে বা হাঁটতেও প্রচণ্ড অসুবিধা হতে পারে।
ফুসফুস ক্যান্সারের অনেক লক্ষণই আছে । তবে কোন লক্ষণই সুনির্দিষ্ট নয় (ক্ষুধামন্দা,ওজন হ্রাস, অবসাদ) ইত্যাদি ও হয়ে থাকে।
রোগ নিরূপণের উপায়ঃ অনেক সময়, রোগ শনাক্ত হবার পূর্বেই অনেক রোগীর ক্যান্সার Metastatic বা ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত যেসব জায়গায় ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে, তা হল – মগজ বা মস্তস্ক, হাড়, লিভার। প্রায় ১০% মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হবার সময় কোন লক্ষণই ধরা পড়ে না। এসব ক্যান্সার রোগীর নিত্য-নৈমত্তিক পরীক্ষা, যেমন বুকের এক্সরে করতে গিয়েই বেশি ধরা পড়ে । এছাড়া কম্পিউটার টমোগ্রাফির মাধ্যমে ফুসফুসের ক্যান্সার ধরা যেতে পারে। পরবর্তীতে একটি বায়োপসির মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা সম্ভব।
ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণঃ ফুসফুস ক্যান্সারের ৮৫% এর জন্য দায়ী দীর্ঘমেয়াদি তামাক সেবন। বাকি ১০-১৫% যারা কখনো ধূমপান করেন নি,তারা আক্রান্ত হন। জেনেটিক বিষয়,বায়ু দূষণ ইত্যাদি অন্যতম কারন।
চিকিৎসাঃ সার্জারী, ক্যামোথেরাপী এবং রেডিওথেরাপীর মাধ্যমে এর চিকিৎসা করা যায়। ৫ বছর চিকিৎসার পর রোগীর বেঁচে যাওয়ার হার ধরা হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফুসফুসের ক্যান্সারের সমস্ত লোকের মধ্যে ১৭% রোগ নির্ণয়ের পর কমপক্ষে পাঁচ বছর বেঁচে থাকে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ২০১০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে, ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য পাঁচ বছর ধরে বেঁচে থাকার আনুমানিক পরিমাণ ৯.৫%। উন্নয়নশীল বিশ্বের বেঁচে থাকার হার সাধারণত খারাপ। ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্ত করার সময় রোগ অনেক দূর ছড়িয়ে পড়লে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়। কিছ তথ্য থেকে জানা যায় যে, প্রায় ৭০% রোগী অন্ততপক্ষে এক বছর বেঁচে থাকে যখন রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা হয়। আজ এপর্যন্ত। আগামীতে লিভার ক্যান্সারের কিছু ধারণা নিয়ে আসতে চেষ্টা করবো। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন, মহান আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখুন। এবং পর্বটি পড়ুন এবং অন্যকে শেয়ার করুন।

 

রওশন চৌধুরী- সহ সম্পাদক চেতনা বিডি ডটকম।

Leave A Reply

Your email address will not be published.