গত পর্ব শেষ করেছিলাম ক্যান্সারের ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করার কিছু কথা দিয়ে ।
আসলে ক্যান্সার সম্পর্কে লিখলে অনেক কিছু লিখার আছে তাই আজকে চেষ্টা করব ক্যান্সার কিভাবে নিরবে মানবদেহে বাসা বাঁধে, কোন প্রকার ক্যান্সারের কি কি লক্ষণ দেখা দেয় এবং এমন লক্ষণ দেখা দিলে আমাদের করণীয় কি ? এর চিকিৎসা কিভাবে করতে হবে? চিকিৎসা করতে গিয়ে কেমন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়, তা নিয়ে। চেষ্টা করে যাব আমার অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য সুত্রের সাহায্যে। আগেও লিখেছি ২০০ প্রকারেরও বেশি ক্যান্সার রয়েছে। প্রত্যেক ক্যান্সারই আলাদা আলাদা এবং এদের চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা। বর্তমানে ক্যান্সার নিয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে এবং এ সম্পর্কে নতুন নতুন অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এবার তাহলে জেনে নিই কয়েক প্রকারের ক্যান্সার সম্পর্কেঃ
প্রথমে বলা যাক স্কীন ক্যান্সার কিভাবে বুঝবেনঃ স্কীন বা ত্বকের ক্যান্সার সাধারণত সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। কারন বেশিরভাগ মানুষই জানেনা কিভাবে সান প্রটেক্ট করতে হয়। সূর্যের রশ্মী থেকে নিজের ত্বককে কিভাবে রক্ষা করতে হয়। সূর্য রশ্মীতে একটা আল্ট্রা ভাইওলেট এ ও আল্ট্রাভাইলেট বি থাকে। এই আল্ট্রা ভাইওলেট এ এবং বি ত্বকের ক্যান্সারের জন্যে দায়ী। সান বার্ন বা রোধে পোড়া স্থান, বা খারাপভাবে পুড়ে যাওয়া স্থান আল্ট্রা ভাইওলেট রশ্মিতে বেশিক্ষন থাকলে, ধুপপান করলে, কোন নিকট আত্মীয়ের এই রোগ হলে। যেসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং চিকিৎসার জন্যে অতি মাত্রায় এক্স-রে করলেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়। স্কিন ক্যান্সার কেন হয় এই বিষয়ে কিছু যেহেতু জানা গেল, তাই এই রোগের লক্ষন কিভাবে বুঝতে পারব তাও একটু জানা প্রয়োজন মনে করি। স্বাভাবিকভাবে যদিও ক্যান্সারের অনেক ধরনের লক্ষণ থাকে তাই এক ধরণের ক্যান্সারের লক্ষণের সাথে অন্য ধরণের ক্যান্সারের লক্ষণ মিলে যাবার সম্ভাবনাও থাকতে পারে। তাই আমেরিকার এক ত্বক বিশেষজ্ঞের মতের ভিত্তিতে ত্বকের ক্যান্সারের কিছু লক্ষণের ধারণা দিতে চাচ্ছি। যেমনঃ তিল বা আচিঁলঃ শরীরে যদি অপ্রতিসম আকৃতির আঁচিল বা তিল অথবা কোন ব্রণ দীর্ঘদিন ধরে থাকে তা আসলে স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো না। ওগুলোর উপর কড়া নজর রাখতে হবে। এসব আচিঁল বা তিল থেকে স্কিন ক্যান্সার হয় সেটা আমরা অনেকেই হয়ত জানিনা। তাই এদের থেকে সৃষ্ট ক্যান্সার খুব মারাত্মক, কারণ এটি সহজে ধরা পড়ে না। এরা নিরবে আপনার আমার ত্বকে বাসা বাঁধে এবং তা মরণঘাতি হয়ে দেখা দেয়। কিভাবে বুঝবেন ? আঁচিল যদি মসৃন না হয়, আঁচিলের রং যদি বদলাতে থাকে, দিন দিন যদি গাঢ় হতে থাকে, এর আকৃতি যদি দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে এমন কি তা যদি পেন্সিলের পেছনের রাবারের চেয়ে বড় হয়, আঁচিল থেকে যদি রক্তপাত হয় এবং ব্যাথা থাকে, পায়ের উপর যদি কালশিটে দাগ পড়ে এবং তা সহজে ভালো না হয়, অনেক সময় ধুমপানের কারণে মুখের ভিতরে ঘা হয়, হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের নখে কালো দাগের সৃষ্টি হয়। শেভিংয়ের সময় গাল থেকে রক্ত ঝরে এবং তা সহজে বন্ধ হয় না। এরখম অনাকাংকিত দাগ ও লক্ষণ তৈরি হলে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ত্বক যদি অত্যন্ত শুষ্ক, খসখসে এবং কাঁট কাঁটা অনুভুত হয়। যদিও অনেক সময় অ্যাকজিমা হলে এরকম হয়ে থাকে। তবে একথা জেনে রাখা ভালো সাধারণ সমস্যা ও ক্যান্সারের মধ্যে পার্থক্য থাকে। তা হলো ক্যান্সার হলে সাধারণ ঔষধ বা লোশনে কাজ হবে না। এমন লক্ষণ দেখা গেলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে এবং দ্রুত ভালো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে। আজকে এ পর্যন্তই ত্বকের (skin cancer) ক্যান্সারের আরো অনেক বিষয় রয়েছে সেগুলো নিয়ে আগামী পর্ব আসছে।
(চলবে, সেই পর্যন্ত আজকের বিষয়টি ভালোভাবে পড়ুন এবং অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করুন। নিজে সচেতন থাকুন এবং অন্যকেও সচেতন রাখুন আর সৃষ্টিকর্তাকে সর্বদা স্মরণ করুন।)
রওশন চৌধুরী- সহ সম্পাদক চেতনা বিডি ডটকম।