গত পর্ব শেষ করেছিলাম এই দিয়ে যে, ঠিক কি কারণে ক্যান্সার হয় সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে সাধারণ কিছু কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। আজ সেই কারণগুলো শুরু করা যাক তাহলে। কারণগুলো হলোঃ
বয়সজনীত কারণঃ
সাধারণতঃ বয়স যত বাড়তে থাকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তত বাড়তে থাকে, কারণ এ সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এক হিসেবে দেখা যায় যত মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাদের শতকরা ৭০ ভাগেরই বয়স ৬০ বছরের ওপর। তবে এখন তার তারতম্য খুব নেই। এখন যেকোন বয়সের মানুষই ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এইতো মাত্র ক’মাস হলো ২০১৯ এর জুলাই মাসে মাত্র ২০ বছর বয়সের বুয়েটে পড়া মেয়েটি মারা গেলো। তার রোগটি ধরা পড়েছিল মারা যাওয়ার মাত্র একমাস আগে। এছাড়া কানাডায় বসবাসরত আমার এক আত্মীয়ের আত্মীয় ২৪ বছরের ছেলেটি অক্টোবরের (২০১৯)প্রথম দিকে সম্ভবতঃ ৫ তারিখে মারা গেলো তার শরীরে ৪৫টি ক্যামোথেরাপী প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং ৪৫তম থেরাপিটি প্রয়োগের পর তার দেহের অঙ্গ-প্রত্যংগ্যগুলি আর ভারসাম্য ধরে রাখতে পারেনি। তাই সে নিস্তেজ হয়ে গলো, চলে গেলো পৃথিবী নামক মায়াময় আবাসটি ছেড়ে। তাই আমি মনে করি ক্যান্সারের জন্যে কোন বাধা ধরা বয়স নেই। তবে বয়স্কদের জন্যে এই ঝুকিটা একটু বেশি এইটুকুই।
খাবার এবং জীবনযাপনের ধারাঃ
খাবার এবং জীবন যাপনের ধারার সাথে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছে গবেষকরা। যেমন, ধুমপান বা মদ্যপানের সাথে ফুসফুস, মুখ ও কণ্ঠনালীর এবং যকৃৎ বা লিভারের ক্যান্সারের যোগাযোগ রয়েছে। তেমনইভাবে পান-সুপারি, জর্দা, মাংস, অতিরিক্ত লবণ, চিনি, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহন, রঙ্গিন খাবার যেমন বাজারের নানান রঙ্গের পানীয়, বাহারি রঙ্গের প্যাকেটজাতীয় খাবার, ক্যানএ (টিন ও প্লাস্টিক জাতীয় পাত্রে এবং দির্ঘদিন ফ্রিজে) সংরক্ষিত মাছ, মাংস সবজি, পানীয় ইত্যাদি খাবারের সাথেও ক্যান্সারের যোগসূত্র রয়েছে। যারা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম কম করে তাদের মধ্যেও ক্যান্সারের প্রবণতাটা বেশি। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ক্যান্সারের সাথে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই পারিবারিক ইতিহাসে ও ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণে পরিবারের কারো যদি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা থাকে তাহলে অন্যদেরও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়। তবে এব্যাপারেও আমার ধারণা একটু ব্যাতিক্রম, কারন আমার জানামতে আমার পরিবারের তিন প্রজন্মের মধ্যে ক্যান্সার বহনকারী আমিই প্রথম। পরম করুনাময় যেন ক্ষমা করেন আমাদের সবাইকে। আজ এ পর্যন্ত, আগামী পর্বে বাকি কারণগুলো নিয়ে আসব আপনাদের সামনে। সেই পর্যন্ত আজকের পর্বটি পড়ুন, নিজে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।
রওশন চৌধুরী- সহ সম্পাদক চেতনা বিডি ডটকম।