প্রতিদিন ঘোর অমানিশা দূর হয়
একটু একটু করে আলোর সুতোয় বুনে
সূর্যের উত্তাপ,দখিনায়নের পথে—-
জমাট অন্ধকারে ধূপশিখা জ্বলে সুবাসিত করে
হৃদয়ের মোহনা
সে আমার দেশের মাটির সোঁদা গন্ধ!
অগ্রহায়নের কুয়াশায় মন মাখে নবান্নের ঘ্রাণ।
যদি কেউ প্রশ্ন করে —-
অপরূপ সুন্দরের নিসর্গ কোথায় আছে!
বলবো সে আমার দেশের সবুজ শ্যামলিমার মাঝে।
আমি দেখেছি স্বর্গোদ্যান, অবারিত ফসলের মাঠে,
কখনো তা ডুবে যায় বন্যাজলে,কখনো আবার ভিজে যায় শিশিরজলে!
সে যেন এক হীরক খন্ড,আমার দেশের মাটি,
প্রতিদিন ছুঁয়ে দেখি আমি, পৌষালী কুয়াশা জড়ানো প্রভাতে!
অরুণাভ আলোর নাচন দেখি,
গাছের পাতায় পাতায়,উড়ে যায় খয়েরী শালিক
অশত্থের ডাল ছুঁয়ে,
পাখীর সুরে সলাজ রবি উঁকি দেয়,
কোনো এক মায়াবী ভোরের বেলায়!
জানিনা স্বর্গ কেমন!
নীল জোছনায় ডুবে যায় যখন পৃথিবীর সব কোলাহল,
অপূর্ব চন্দ্রিমায় একফালি চাঁদ আর আমি মুখোমুখি!
অন্তহীন সমুদ্র সম্মুখে,
অদ্ভুত এক জীবনের সংগীত সুর সাধে মায়ায়-
সফেদ ঢেউয়ের দোলায়,
হয়তো তা স্বপ্নালোকের ঘুমপাড়ানিয়া সুর
মন খুঁজে না তখন স্বর্গ কতদূর!
আমার দেশ, স্বর্গের চেয়েও দামী
কুমড়ো লতায় লাফায় যখন ছোট্ট টুনটুনি,
জারুলের ডালে হলদে পাখিরা—–
অবাক বিস্ময়ে দেখি ধানসোনা রোদে
সোনার ফসল ভরেছে আমার আাঙিনা!
যদি চলে যাই কোনো অজানালোকে,
হঠাৎ একদিন!
আবার আসিবো ফিরে,আমার দেশের তরে,
সর্ষে ফুলের হলুদ ছুঁয়ে যায় যখন ধু ধু প্রান্তর
কাঁঠালিচাঁপার ঘ্রাণে বিমোহিত হয় বন-বনান্তর,
ঘুঘুর ডাকে ক্লান্ত হয় বিকেলের ম্লান আলো
আমি জোনাকীর মতো জ্বেলে দেবো আলো
সন্ধ্যা প্রদীপ হয়ে।
বার বার আসিব ফিরে——
হয়তো অন্য কোন রূপে,
হয়তো উড়ু উড়ু শরতের ধবল মেঘ হয়ে
আমার প্রিয়তম দেশের আকাশে ।।
হাছিনা মমতাজ ডলি- কবি