Take a fresh look at your lifestyle.

তেত্রিশ বছর

575

 

দেখ শেষ যৌবনে এসে আমরা কেমন জিতে গেলাম!
বাব্বা! সে কতনা যুগ।
যেন কত যুদ্ধ
দুজনার কত আকুতি মিনতি কত আক্ষেপ কত অপেক্ষা,,,
কখনো রাত আবার কখনো দিন
সে চতূদর্শীর রাত!

একদিন ঝাঊতলার সেই পরিত্যাক্ত বাড়ির ভাঙা জানালার পাশে তোমাকে দেখতে গিয়েছিলাম
সে কি কান্ডই না ঘটে গেল,

তুমি বললে- আমি নিশিথিনী সাজবো ধূপছায়া পূর্নিমাতে_
আর আমার জলচ্ছ্ববি নিয়ে হরে হরে কৃঞ্চ হরে বলবে তোমার পিসতুতো আইবুড়ো মৃনালিণী বোনটি।

দেখ, শেষ প্রহরের আর শেষ ফাগুনের একটা রূপ দেখা যায়।
আমাদের কাজল ডাঙ্গার ডাহুকি পাখিটার লেজটা ঠিক শেষ রাতের চাঁদটার মতো বাঁকা;
আর ফাগুনের রূপটা যেন তোমার মধ্যে আঁকা!

একবার তীর্থে যাব আমরা,,,,,
তোমাকে বলেছিলাম হয়তো
দুজনার দুটি হাত নীল মোড়কে চেপে
কি র্নিলোভ আমাদের দুটি ভাষা!
তোমাকে আমি আর আমাকে তুমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে আমাদের মলিন বিরহের ঘাঁটি বাঁধলাম
চেরী ফুলের অগ্রভাগে,
তুমি সন্যাসী হবে- আর আমি বৈষ্ণবী।

এই ভাবে আমাদের কাটলো দীর্ঘ তেত্রিশ বছর!

নিঃসঙ্গতার দেয়ালে আমার ছেড়া খোড়া শুন্য মন
আর দুঃস্বপ্নের ম্লান প্রেম;
আলস্য দুপুরে গড়িয়ে পড়তো আমার মুক্তদানা।

তুমি একদিন এসেছিলে,,,,,,,, আমার ভাঙাচুড়া মনটা দেখতে,
তোমার বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া র্নিজন দেহটা
ভালো করে আমার আগুনে ছেঁকতে।

আমাদের কত কি ই করা হতো?
কত ভুলেও বির্দীণ হতো মনের বাসনা!

আবার আমার স্বপ্ন ভাঙতো তোমার নিঃশ্বাসের গন্ধ শুকে;
কি ছত্র পত্র খোলা চোখে ছিল ভালোবাসার লোহিত নেশা _
কখনো দুজনে মুখোমুখি বসে তারা গণনার দিপালী চলতো,
তোমার দ্বির্ঘায়ীত কথার মধ্যে থাকতো আমার চোখ।

তারপর:
একদিন_ আমাদের পদযাত্রা বিচ্ছিন্ন হলো।
ভাঙলো দেহের কলসি
তোমার’টি রইলো উবু হয়ে একটানা ১৪ বছর।
আর, আমি গেলাম যমের দুয়ারে
যুদ্ধ করলাম ১৩ টি তিথি!

কিছুতেই সেখানে আমার থালাটা ঘষামাজা বন্ধ করতে পারি নি।
সে কত অনুনয়, বিনয়,
কত অনুযোগ,
আমার ঘরপোড়া মন তোমার ধ্যানরত থাকতো গভীর গ্রীবায়_

——–আমার পল্লবে যে সব চুম্বন রেখা
তা আমি আগুনের ছেকায় পুড়িয়ে রেখেছিলাম,
যেন- আর কোন লালসার আগুনে তলিয়ে না যায়
বাকি আর ছয়’টি বছর পুড়লাম চিতার আগুনে!

আমার সমর্পিত দেহের ভাঁজ;
এখন আর আগের মতো নেই?
টাটকা যৌবন এখন শেষ বিকেলের ঝাপিতে পড়ে থাকার মতো
আমার নিষিদ্ধ দড়জা নুয়ে পড়েছে এগারোটি পুস্পের ভারে
ওরা এখন অনেক দুরে……

ওদের চোখে যাদু আছে,
জোছনা আছে,
রাত আছে,
কাঁপা কাঁপা রোদ আছে,,,,,,,,শরীরে মুর্ছণা আছে
কচূরী পানা আছে, উষ্ণতা আছে,
সুখ আছে
আরো আছে সাত কাহন!

আমি আমার সব ঢেলে দিয়েছি…….তাদের ভেতর

কেবল তোমার জন্য রেখেছি
আমার শেষ যৌবনের ভাঙা গতর!!

 

 

মিতা – কবি ও সাহিত্যিক।

Leave A Reply

Your email address will not be published.