বাষট্টিহাজার গ্রাম কচিধানের ক্ষেত ফসলের মাঠ,
আম নারকেল সুপারি ও কাঁঠালের বন
জেনে রাখো,
আমি রক্তে শোভিত কোনো সৈনিক নই,
তবুও রক্ত নদীতে ভাসছি
স্বাধীনতার জন্য।
জেনে রাখো ফাগুনের ফুল কৃঞ্চচূড়া শিমুল পলাশ
বিচ্ছিন্নতা আমি জানিনা,
জানিনা গৃহত্যাগের বিরহ
এই প্রথমবার আমি ছেড়ে যাচ্ছি
বটের ছায়া প্রিয় বাঁশবাগান হিজল জারুল জামের হরিৎ অরণ্য
যদি বেঁচেথাকি দেখা হবে হবেই বিজয়ে,
স্বাধীনতার নব উল্লাসে।
আমার একহাতে ছিলো লাঙল জোয়াল
অন্য হাতে কলম
সেই হাতে তুলে নিয়েছি মরণাস্ত্র গ্রেনেড
শুধু স্বাধীনতার জন্য।
আমি চাইনি হলুদ সর্ষের মাঠে লাল রক্তের দাগ
যে হাতে একটি পিঁপড়েও মারিনি কখনও
সেই হাতে লিখেনিয়েছি মৃত্যুর পরোয়ানা
কসম এই মাটির যদি বেঁচেথাকি
আমিও রক্তের বন্যা বইয়ে দেবো সেইসব অসুরের,
স্বাধীনতার জন্য।
মেশিনগান রাইফেল দেখিনি আমি
জানিনা কোনো যুদ্ধের কারসাজি
দেখিনি ধ্বংসের ভগ্নস্তূপ
স্বাধীনতার জন্য নিতেপারি আমি অযুতবার জীবন বাজি।
এই বসন্তের কোকিল এই দখিন হাওয়া
জেনে রাখো,
যদি বেঁচেথাকি ,
আমি ধ্বংসের কারবালায় পরিণত করবো
সেই সব হায়নার,
স্বাধীনতার জন্য।
এই নদী আকাশ পাখি জেনে রাখো
আগুনের দগ্ধতা দেখিনি আমি
লেলিহান শিখায় জ্বলছি তবুও সাতকোটি জনতা
আমি বুকে তুলে নিয়েছি আগ্নেয়াস্ত্র
শপথ এই পোড়া যন্ত্রণার
জ্বালিয়ে ছারখার করে দেবো
থামিয়ে দেবো তাদের প্রাণের স্পন্দন
স্বাধীনতার জন্য।
এই সূর্য পূর্ণিমার চাঁদ মায়াবী জোছনা
ঝাঁকে ঝাঁকে জোনাকি
জেনে রাখো
আমি চাইনি তারাখচিত আকাশে
ঘোর অমানিশার দুর্যোগ
কসম এই মাটির আমি নেবো নেবোই প্রতিশোধ।
আমি উন্মত্ত দুর্দান্ত যোদ্ধা হতে চাইনি
চেয়েছি মুছে দিতে লাঞ্ছিত আর্তের হৃদয় ছেড়া কান্নার দাগ।
এই হাতে লেগে আছে স্নিগ্ধ মাটির সুবাস
দুখানা পা ভিজে আছে এখনও নিশীথের শিশিরে
সেই হাতে বারুদের ঝাঁঝালো গন্ধ
পায়ের তলায় রক্তের ঢল,
স্বাধীনতা তোমার জন্য আমি হবো সহস্র বার সংশপ্তক,
শুধু তোমার জন্য হে প্রিয় স্বাধীনতা।
রত্না আফরোজ- কবি।