আজকাল প্রায়শই আমাকে গ্রাস করে
অনন্ত দুঃস্বপ্নের এক অদ্ভুত আঁধার…
মহাকালের অনিশ্চিত অক্ষমতায়
আমি ডুবে যাই,
ডুবে যেতে যেতে ঠাইহীন
অতল আঁধারে তলিয়ে যাই,
আমি পালাতে থাকি
ক্রমাগত আমি;
আমার থেকে পালিয়ে বেড়াই!
বঞ্চিত পৃথিবীর অভিশাপ-ঈশ্বরের দীর্ঘস্বাস
অহর্নিশ আমায় তাড়িয়ে বেড়ায়…
ঘুম থেকে নির্ঘুমতায়;
স্বপ্ন থেকে দুঃস্বপ্নের অচেনা সীমায়,
জ্ঞান থেকে অজ্ঞানতায়;
প্রেম থেকে প্রেমহীনতায়।
আমি পালাতে থাকি…
শোকে, জরায়, ভীরুতায়
পালাতে থাকি যৌবনের অসহায় নির্লজ্জতায়!
আমি পালিয়ে বেড়াই…
তুমিতে আবর্তিত আমি থেকে;
ঘরহীন বাড়ি থেকে;
মনহীন মনন থেকে।
অনন্তের এক অদ্ভুত আঁধারগ্রস্ত আমি পালিয়ে বেড়াই ;
পালাতে থাকি …
বোধহীন বিবেক থেকে
আঁধার ঘেরা আলো থেকে;
মৃত্যু আঁকা জীবন থেকে,
আলমীরাতে ঝুলে থাকা আমার বাহন…
সারিবদ্ধ জামাগুলো থেকে।
অতঃপর আমাকে জাগিয়ে তোলে মিথ্যর আলোকঘেরা জীবনের রঙ্গমঞ্চের তুমুল কোলাহল…
মুহুর্মুহু হর্ষধ্বনি, করতালি…
মায়াহীন কায়ার মাঝে অহমিকার আগ্রাসী নাচে
নিরন্তর আটকা পড়ি আমি।
নাচে সভ্যতার জ্ঞান;
নাচে স্বপ্নালু হাতছানির বিজ্ঞান
নাচে আত্মহারা অবাক ধরনী;
নাচে মত্ত আদিগন্ত সবুজে ক্রমাগত আগ্রাসী হলুদ;
নাচে যুবক, বৃদ্ধ, জরায় ফ্যাকাশে উদ্ভ্রান্ত আমাদের বোধের জননী!
নাচে দৃশ্যমান উন্নয়ন; নেচে চলে জীবনের ব্যকরণ!
অহমের বিবরণে উমত্ত নাচের অন্তরালে
পার্থিব প্রার্থনায় হাসেন অন্তর্যামী,
শুধু উদ্বাহু নৃত্যরত চকচকে রঙিন জামার আড়ে
দুস্বপ্নের এক অদ্ভুত আঁধারের তাড়ায়
পালিয়ে বেড়াই ; পালাতে থাকি…
ক্রমশ বিবর্ণ নাচভোলা এক আমি!
মনিরুল ইসলাম চঞ্চল – কবি, সাহিত্যিক ও সংগঠক।