আমার মায়ের নাম সুখজান
বাবা সংসার উদাসীন।
কপাল দোষে সুখ ভেঙে খান খান।
নামকরণের সার্থকতা ব্যর্থ হয়েছে।
ভীষণ ভালো বেসেছে সৎ সন্তানদের
তবুও কোনদিন মা বলে ডাকেনি তাকে।
কী নিদারুণ আফসোস তার। অথচ মাকে
আরও আটজন নিবিড় ডাকে;
প্রতিদিন ডেকেছে তাকে।
সময়ের পাখিদের মতো।
তবুও কখনো গলেনি ঐ দু’জনের প্রাণ
এই হলো দেশে দেশে
আমাদের ভালবাসার প্রতিদান।
বড় হয়ে জানলাম পাথরের বুকেও
কিছু জমে থাকে রস
মরুভূমির বালু চিপে হয়তোবা
পেয়ে যাব সামান্য কষ।
মানুষের হৃদে তবু
ফুল হয়ে ফুটে নাকো সামান্য জল
এই হল জমিনে মানুষের
সবচেয়ে বড় অবদান,
এই হল এই দেশে আমাদের
ভালবাসার প্রতিদান।
মা আমার কষ্ট পেতো ইদের দিন
আমাদের অন্যরকম উৎসবে,
এতগুলো ছেলেমেয়ের নতুন পোশাক
বড়রা বহুকষ্টে ধৈর্য ধরে
ছোটরা কেঁদে হয় সারা।মা বলে,
‘ ইদ কেন আসে?’
ওদিকে রাতের সংসদে
গোপন বাজেটে নতুন পোশাক
পরে স্বর্ণ লতিকা- রসালের ডালে।
মা তাই অশ্রু জলে
ভারি কন্ঠে বলে ওঠে
‘ কেন ইদ আসে?’
মা এখন আকাশে চাঁদ হয়ে হাসে
মায়ের হাসিতে আমি ঐ দুই জনের
ছায়াছবি দেখি।
আর সাতজনে
দিন গোনে
ছানিপড়া চোখে
অবাক তাকিয়ে থাকে ঊর্ধ্বলোকে।
সেই এক একাকী
পৃথিবীর সব মায়ের হাসি দিয়ে
গড়ে দিছে — পূর্ণিমার চাঁদ।
আপন মায়ের মিষ্টি হাসিটুকু
খুঁজে পাওয়ার কার আছে সাধ।
ওয়াজেদ বাঙালি – কবি ও সাহিত্যিক।