ফজরের আজান শেষ হতে না হতেই
আকাশ বাতাসে ভেসে এসেছিলো
কোন অসুরদয়ের সহস্র জুতোর
কুচকাওয়াজের শব্দ ধ্বনি|
এই শব্দ ধ্বনি বাংলার মাটিকে
চিরে হিসরে কেড়ে নিয়েছিলো
তার স্বাধীনতার মর্যাদা|
এই মাটির ত্রিদশা
কোন বর্বর নিয়েছিলো কেড়ে?
নিতে দেয়নি স্বাধীন বাতাসে নিঃস্বাস,
স্বাধীন স্বপ্ন দেখার সাহস ছিলোনা,
ছিলোনা লেখার কলমের
স্বাধীন শব্দের ব্যবহার!
ঘুমের মধ্যে সৈন্যদল দিয়েছিলো
হেনরি নকের উঁকি,
উঁকির অত্যাচারে মন গহীনে
ভয়ের ত্রাসের ধুকপুকুনি!
ভীত মনের ডুকরানো কাব্য কথা
শোনার কেউ ছিলোনা পাশে,
চারিদিকে রক্তের ফোঁটা
জমতে জমতে
এক লাল সায়রের জন্ম|
মায়ের বুক ফেটে মৃত্যুর আওয়াজ,
সন্তান ঘুম ছেড়ে নাম
লিখিয়েছে মুক্তিফৌজে |
এই মুক্তিফৌজ মুক্তি দেবে
সকল শিকল ভাঙা জীবনের!
ভাষার মুক্তি,জীবনযাপনের মুক্তি,
ছোট-বড় ভেদাভেদের মুক্তি!
সকল দুঃখের মুক্তির নামিই “মুক্তিযোদ্ধা” |
শুরু হলো স্বাধীনতার মুক্তির লড়াই,
প্রাণ নেওয়া ওই শয়তানের দল
জ্বালিয়ে গেছে গাঁয়ের পর গাঁ,ঘর-জমি,
পুকুর খাল-বিল ভেসে রক্ত নদীর ধারা,নারীর দেহ ধর্ষিত ওই বর্বরদের হাতে,নারীর ইজ্বত নিয়ে গুনা,এ কোন পাষণ্ড এসেছিলো এই মাতৃভাষার দেশে|
অত্যাচার বেড়েছিলো,বেড়েছিলো প্রতিবাদী ভাষার তেজও,
বর্বর সৈন্য যুদ্ধের ডামাডোলে গোপনে নিয়ে এসেছিলো মীরজাফর চাল, সে ভয়ে দেখেছিল নিজ মুক্তির সুখ,সে ছিল ওই পাষণ্ডদের খবড়ি! হায়রে আমার খবড়ি নিজের চালে নিজের দেহে দাগ রেখে গেলি,সেই দাগ আজও তোর নিজ নিঃশ্বাসে দ্রোহী |
হাজার রক্তের বলিদানের পর
এলো সেই চুক্তির সমীকরণের দিন,
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হলো ইতিহাসে
পাতায় উল্লেখিত এক নতুন স্বাধীন অধ্যায়|
জন্ম নিলো তোমার আমার বাংলাদেশ,
আজ সেই বিজয় দিবসে আমার বাংলা থেকে মুছে যাচ্ছি আমি…..
এই বাংলা এখন ভাগ হয়েছে
এপার -ওপার….
ওই রক্ত ছিলো আমাদের সকলের,
নাম ছিলো তাতে আমাদের সকলের|
এই বিজয় দিবস হোক সকলের,
এই বিজয় দিবস হোক সকল বাঙালির,
না মোরা হিন্দু না মোরা খ্রিস্টান না মোরা মুসলিম
মোরা নুতন বাংলাদেশ 🇧🇩
রাজদীপমজুমদার _ কবি, লেখক, সাহিত্যিক ও সংগঠক