কেন এমন হয় রে মা?
রাস্তায় থাকি শুয়ে।
সবাই কেমন অবজ্ঞা করে,
হাঁসে আমাদের নিয়ে।
তুই নাকি পাগলি রে মা,
গায়ে অনেক দোষ।
গর্ভবতী কেন হলি?
এটাই আফসোস।
মারে আমি ভাগ্যবতী,
তোকে কাছে পেয়ে,
নিস্পাপ এই মুখ খানিতে,
আদর আছে ছেয়ে।
দোষী কেন তুই হবি মা?
মাখবি কেন দোষ?
যাদের জন্য জন্ম নিলাম,
তারা কি নির্দোষ?
রাতে তোকে আপন করেছে,
দিনে গিয়েছে ফেলে।
আমি যখন জন্ম নিলাম,
নেইনি তুলে কোলে।
তুই কেন কাঁদবি রে মা,
চোখের জল মোছ।
আমার বাবা কোথায় আছে,
পেয়েছিস তার খোঁজ?
সমাজ আমায় দেবে গালি,
পিতৃ পরিচয় ছাড়া।
কিভাবে বাঁচবো বল,
নাম পদবী ছাড়া?
পাগলী মায়ের মেয়ে আমি,
নেই কোন জাত,
দোষটা কোথার বল না আমার?
গালি খাই দিন রাত।
পেটে আমার ক্ষিদের জ্বালা,
ছেড়া পোশাক গায়ে,
ফুটপাতের মাঝে থাকি পড়ে,
জুতো নেই পায়ে।
ঠান্ডায় ভীষণ কষ্ট পাই,
কেন বুঝিসনে তুই?
গরম কোনো পোশাক রে মা,
আমাদের গায়ে নেই।
বাস্তবতা কাকে বলে?
চিনতে শিখেছি বড়ো।
পাগলী বলে কেমন করে,
সমাজের কাছে হারো।
ভয় পাসনে মারে তুই,
আমি আছি পাশে।
অন্যায় হতে দেবো না আর,
যতোই রাত আসে।
তোকে বড়ো ভালোবাসি মা,
গর্ব আমার তাই।
পরের জন্মেও মা হিসেবে,
তোকে যেন পাই।
পাপড়ি চক্রবর্তী- কবি।