এই শহরের অখ্যাত এক চায়ের দোকানদার,
অনেকগুলি পেট বাড়িতে সামান্য রোজগার!
স্বামী-স্ত্রী বারোটা মাস দু’জন মিলেই হায়,
রোদেজলে ভিজেপুড়ে দিন আনে দিন খায়!
পেটের খিদের তীব্র বলেই মনের খিদে কম,
ভাতের জন্যে করতে -ই হয় গাধার পরিশ্রম!
শুয়ে বসে থাকার মতন সময় ওদের নাই,
ব্যাধি লয়ে পেটের টানে দোকান খোলে তাই!
ছায়ার মতন সাথ ছাড়ে না অভাব অনটন,
ক্ষুধার্ত পেট টাকার খোঁজে ব্যস্ত সারাক্ষণ।
লকডাউনে দোকান অচল চলছে বেড়ে ঋণ,
হঠাৎ করেই মুখ তুলে চায় ভগবান একদিন!
দশটা টাকা বাঁচবে বলেই হেঁটেই আসে-যায়,
ফেরার পথে সেদিন রাতে একটা থলে পায়।
তোলার সময় পথের কুকুর উঠল গেয়ে গান,
ব্যাগটা আবার ফেলে গেলো কে যে ভগবান!
খুলে দেখল থলে ভরা পাঁচশো টাকার নোট,
এতো টাকা দেখে দোঁহের উঠল কেঁপে ঠোঁট!
‘চায়ওয়ালা’ ফিরলো ঘরে সঙ্গে নিয়ে বউ,
কি ঘটেছে রাত্রিবেলা জানলো না তা কেউ!
বাপের জন্মে দেখে নি হায় এতো টাকার মুখ,
এবারে কী আসবে ঘরে দুঃখের শেষে ‘সুখ’ ?
ঈশ্বর কী আজ খুশি হয়ে দিলেন তবে ‘বর’ ?
চাইলেই এতে হয়ে যাবে পাকা বাড়ি ঘর!
টাকার গন্ধে বিপদ বাড়ে বোঝে জ্ঞানী লোক,
নানা কথা ভেবে রাতে বুজল না আর চোখ!
থানায় জমা দিয়ে থলে ভোরবেলা দুইজন,
আগের মতন দোকান খুলে কাজে দিল মন।
বললো খুড়ো,”চতুর হলেই বিদায় নিতো দুখ”,
“পরের ধনে উদর পুরে মেলে কী আর সুখ ?”
বিষ্ণুপদ বিশ্বাস – কবি ও সাহিত্যিক।
বর্ধমান, ভারত।