আমিও আর সবার মতো নিয়মের কাছে
বিকিয়ে দিয়েছি হৃদয়ের সুখ।
ধরাবাঁধা সময়ের কর্তব্য কর্ম, ঘর গৃহস্থালি সেরে—
নিজের ভেতরে, গভীরে তাকানোকে দিয়েছি বিসর্জন!
অন্তর্গত সৌন্দর্য অনুধাবনের বোধ ঝরে গেছে
অপরিমেয় নির্লিপ্ততায়, অনবরত অবহেলায়।
রোজ প্রাতে রবির কিরণে মন মাতায় কে?
কে মাখে মিঠেকড়া রোদ পৌষের সকালে হিম শরীরে?
কাঠবিড়ালির পুচ্ছের নাচনে বিমোহিত হয় কোন চোখ,
কে তার পিছু পিছু দেয় ছুট ডালে-ডালে, মনে-মনে?
তারে কি হিংসে করি আমি? সত্যিই করি কি!?
কখনো কি দেখতে চাই ফুলেদের জেগে উঠার দৃশ্য?
কান পেতে শুনতে চাই কভু পাখিদের প্রভাতি সংগীত?
জোছনায় ভেসে যাওয়া শরৎ আকাশ দেখি!?
কেবল তো চোখে পড়ে পাঁচ তারকার বিলাস!
নামী ব্রান্ডের গাড়ি-ঘড়ি কিংবা দামী ঝাড়বাতির রোশনাই!
পুঁতিগন্ধময় জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে তুলির আঁচড়ে
একদা শহরের দেয়ালে আশ্রয় নিয়েছিলো যে সুবোধ;
সেখান থেকেও বিতাড়িত করেছে বিলাসী জীবনের বিজ্ঞাপন।
আমি-তুমি-সে অভ্যস্ত হয়ে গেছি ‘আমার’ ভাবনায়;
…. নীতিহীন বিলাসী জীবনে—দোষ দেবে কাকে?
চাকচিক্য আর জৌলুসের কাছে হেরে গেছে মৌলিক সৌন্দর্যবোধ।
এই লোভী, স্বার্থপর, নগ্ন জৌলুসের শহরে সুবোধের ফেরার
কোনও উপায়, সুযোগ বা সম্ভাবনা নেই।
কুলসুম আক্তার সুমী- কবি ও সাহিত্যিক।