আবির্ভাব- ২
প্রতিক্ষেত্রেই কাজ আর কাজের সাথে
নিজেকে সংযুক্ত রেখেছে।
রেহনুমার জীবনে হাজারো প্রশ্ন লুকিয়ে আছে,
“জীবনের নাম যদি রাখা হয় ভুল
স্মৃতির পাতায় লেখা বেদনার’ই ফুল!
এই ভুল গুলোও আর শুধরানো হলো না।
জীবন এখানেও বন্দী
জীবনের সুখ বলতে গেলে——চাপা দীর্ঘশ্বাস!
প্রেম মরে গিয়েছে সেই কবে
আজ একটু মনে পড়ছে
“প্রিয় বান্ধবী” অহনার কথা!
প্রায় চল্লিশ বছর পর সেদিন অহনার সাথে দেখা।
সেই কবেকার কথা,
এক সাথে দুজন কত না সময় পাড় করে দিয়েছে।
সেদিন রেহনুমা আর অহনার প্রথম দেখা
চল্লিশ বছর পর!
একটি রেস্টুরেন্টে তাদের দেখা হোল,
অবশ্য ফোনে ফোনেই তাদের মিট করার কথা বলে নিয়েছিল,,
এক সময় দেখা হল অনেক পুরাতন কথা নতুন কথা সব হোল
চল্লিশ বছর আগের কথা মনে করে—-
কয়েকবার তারা হেসে ও উঠেছিল।
কতটা আনন্দিত হলে এমন এক সুখের সাগরে ভেসে তলিয়ে ও যাওয়া যায়!
প্রথমে রেহনুমা অহনাকে চিনতে পারেনি
অহনা’ই রেহনুমাকে চিনে নিয়েছে।
অহনার সারা মুখমন্ডল শরীর, হিজাবের আবরণে ঢাকা ছিল।
অহনা মুখের আব্রু সরানোর পরই
দুজনেই হাসি দিয়ে পরিচয় বিনিময় করে—
অল্প পরিবেশনে দুজন কথার পর্ব শেষ করে।
এক সময় সমস্ত কথার রেশ কেটে দুজন দুজনার গন্তব্যে ফিরে আসে।
তবে_ রেহনুমার একজন ভালবাসার মানুষের কথা একটু না বললেই নয়।
এতটাই ভক্ত যে এই মুহূর্তে তাকে যা বলবে সে’টা ঠিক করে দেখাবে,
এই ভালবাসা বিষয়ক কথাটাও আজ না হয় থাকলো।
ঘরের মানুষ গুলো ও আজকাল ভীষণ হাক ডাক দিয়ে ডাকতে থাকে——
এত টুকু যেন নমনীয়তা নেই?
জানি না এখানে ভালবাসাটা কতটুকু!
এতটা অবাক হবার কর্মকান্ড ঘটেনি,
ভালবাসাটা ঐ খানেই সীমাবদ্ব কর্মযোগ বিষেস্বত্ব
এই হচ্ছে রেহনুমার ভালবাসা।
রেহনুমা ভালবাসে গভীর থেকে গভীরে….
এ এক টান!
আর একজনের কথা রেহনুমা আজ আর বলতে চাইছে না।
জীবনের ইতিকথা সব আজ থেমে আছে,
স্তদ্ধ হয়ে আছে সমস্ত ভালোলাগা গুলো!
আগের মত তেমন চঞ্চলা নেই,
পা’য় মাদল নেই,
হাতে মেহেদির সাজ নেই!
আলতার রঙে আর পা’য়ে আল্পনা আঁকা নেই।
জীবন এখন দূর——স্মৃতির ভাঙা দেয়াল!
যেন এক রচনাবলি,,
তবুও এতটা কাছে আর টেনে আনে না।
সময় এখন হেলে পড়ে আছে,
শুধু নীরবে রোদন, হাহাকার না পাওয়া এ সব মনের ভিতর জমা রেখে রেহনুমা বেশ আছে।
এই চলে যায়__
কেলেন্ডারের পাতায় টিক চিহ্ন দিয়ে কাছের মানুষ’দের স্বরণ করা!
বিশেষ করে মৃত্যূর দিন এটাই মনে করিয়ে দেয় রেহনুমার সব চেয়ে স্মৃতির ক্ষণ!
যে ভুল গুলো রেহনুমার হবার কথা নয়_
সেদিন সেই ভুল হতে যাচ্ছিল, ব্যাপারটি যতই সামান্য হোক – আনমনা ভাব কাজের অনীহা ধরা পড়ে যায়।
ভাগ্যিস ঢেলে দেয়নি রান্না করা ডালের ভিতর
চা পাতা!
উদাসীনতার একটা উপলক্ষ্য থাকে—-
চলবে—–
মিতা – কবি, সাহিত্যিক ও সংগঠক।