কবির মিয়া একা মানুষ,বোনের বিয়ের পুরো আয়োজন তার পক্ষে একা এ্যারেজ করা দূরহ।প্রতিবেশি সেন্টু, বাচ্চু, মফিজ আর মিন্টুকে ডেকে স্ব-স্ব দায়িত্ব বুঝে দিল কবির।
তুষের আগুনের মতো জ্বলছে আলো, মিন্টুও মনে মনে পছন্দ করত আলোকে।কত স্মৃতি কত কথা লুকচুরি খেলছে তাদের মাঝে।
মিন্টুর ধান কাটা, প্রয়োজনে বাজার করা, পুকুরে মাছ ধরা সবকিছুতে কলুর বলদ।
আলো ক দিন থেকে মিন্টুকে দেখলেই টিস করছে।
এই ! এই ! বলদ। কামের মজুরী কত?
তোর জীবনে বিয়া হইব না, তুই তো একদম অন্ধ।ইত্যাদি
মিন্টু সব কর্মকাণ্ড নিরবে অবলীলায় হজম করে।
আর্থিক অসঙ্গতি থাকলে অনেক কিছুই ঠিকঠাক হয়ে উঠে না।
কবির মিয়ার কাজ আর আর্থিক সহযোগীতায় মিন্টু এত বড় হয়েছে তা বুঝে সে।
বট গাছের ঝিরিঝিরি বাতাসে বসে আলোর গান, দক্ষিণা বাতাসে আলোর ওড়নার উড়ন্ত ছায়া, নদীর কোমর পানি থেকে তুলা শাপলা -পদ্ম আলোর খোপার দুলনী মিন্টুর জীবনে কালবৈশাখীর মত।
উভয়কে যেন অন্ধকরে কোন এক সাপে দংশন করেছে।
ছেলে -মেয়ে, ছোট-বড় যাইহোক সাপের কামড়ের যন্ত্রণা একই।
কেউ কাউকে কিছু বলতে পারে না কিন্তু দুজন দুজনকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করে।
একেই হয়তো বলে ভালোবাসা।
মিন্টুর দায়িত্ব পড়েছে ডেকোরেশন আর খাবার আয়োজনের গরু আর খাসি কেনার।বিয়ের কথা আলোচনার পর থেকে আলো অনেকটা অন্যমনা হয়ে গেছে। ঠিক মত খাওয়া,গোসল,ঘুম কিছুই হচ্ছে না।
ঘুনে ধরা কাঠের মত আস্তে আস্তে শক্তিহীন হয়ে যাচ্ছে।
আজ রাত আট টার পর আলোর বিয়ের পরামর্শ বৈঠক। আগামীকাল এলাকার বড় হাট, বটতলা হাট, সবার পরামর্শ ক্রমে নিখুঁত বাজার তালিকা হবে যাতে কোন কিছু বাদ না যায়।
—— চলবে
আব্দুল মতিন-সম্পাদক,চেতনা বিডি ডটকম