Take a fresh look at your lifestyle.

নিক্তি (৫ ) শেষ পর্ব

608

 

দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে বিয়ে বাড়ির রান্নার কাজ। আনুষঙ্গিক কাজও চলছে প্রবল বেগে সুচারুরূপে।
আলোর বিয়ের চূড়ান্ত কথা পাকাপোক্ত হবার পর থেকে ক’ দিন রাত-দিন এক করে ফেলেছে মিন্টু।
বিবাহ অনুষ্ঠানে সকল কাজে হাত পড়েছে তার।প্রিয়জনের এমন অনুষ্ঠানে নিজেকে নিবেদন করতে পারলে সবাইকে হয়তো ভাল লাগে।

আজকের আয়োজন খুবই দৃষ্টি নন্দিত।রঙিন কাপড় আর কাগজে ঘিরে ফেলেছে কবির মিয়ার উঠান। কিছু কিছু পয়েন্টে বাহারি ফুল সাজানো।
সাড়ে বারোটা বাজে। ছোট ছেলে মেয়েদের দল কলরব তুললো – বিয়ে এসেছে ! বিয়ে এসেছে !
বেশ কয়েকজন গেটের কাছে অবস্থান নিল। সোনাগাজী চেয়ারম্যানের ছেলে। 1000 টাকার কমে গেট অতিক্রম করতে দেবেনা ছেলে মেয়ের দল। বর পক্ষ 300 সর্বোচ্চ 400 টাকার বেশি দেবেনা। কিছুটা হট্টগোল, মিন্টু সবাইকে বুঝিয়ে 500 টাকায় সমস্যার সমাধান করল।খানিক বাদে সোনাতলার চেয়ারম্যান সোনাগাজীর বাবা ছাতা মাথায় বিয়ে বাড়িতে ঢুকলো, সাথে এক জহুরী।

আলোর মুখে হাসির লেশমাত্র নেই।
গহনা পড়িয়েছে টিকলী, বালা,হার,কানের দুলসহ আরো কিছু।
এবার চেয়ারম্যান কবির মিয়াকে ডাকল!
ব্যস্ততা এড়িয়ে চেয়ারম্যানের খুব কাছে এসে বসল কবির।

চেয়ারম্যান বলল, বিয়ের কার্যক্রম শুরু করা হোক ! তবে চুক্তি মত পাঁচ ভরি স্বর্ন ঠিক আছে কিনা তা পরখ করতে চাই।আমি জহুরী সাথে এনেছি !
স্বর্ন খাঁটি কিনা?
ওজন ঠিক আছে কিনা?
কবির মিয়া কিছুটা ইতস্ততঃ ভাবে বলছে, গত দুদিন আগেই গঞ্জ থেকে আনিয়েছি গহনা, ছেলে আমাদের মিন্টুর মাধ্যমে।

টাকা যা চেয়েছে তাই দিয়েছি। কাঁচা বা ওজনের কিছুতেই কমতি হবে না।
-জহুরী যখন এনেছি তখন মেপে দেখেই নিব।
বিয়ে শাদীর পর ওসব ঝামেলা চলবে না।
মনটা ছোট করে অন্দরমহলে ঢুকল কবির।
মিন্টু বুঝতে পেরেছে কিছু একটা হয়েছে।
শুনে জেনে মিন্টু গেল চেয়ারম্যানের কাছে।

আমি নিজেই স্বর্নলঙ্কার এনেছি কাকা! কোন সমস্যা নেই তাছাড়াও আপনাদের বউকে অলংকার পড়ানো হয়েছে এখন কেমন লাগবে বিষয়টা।

– না বাপু, আমার সন্দেহ দুর করতে চাই।
নিখুঁত নিক্তি এনেছি আমি।
পুরো বিয়ে বাড়ি থমথমে ভাব বিরাজ করছে।

মিন্টু এসে বলল, আলো গয়না খুলে দে।
রাগে ফেটে পড়ছে আলো।

গহনা হাজির করা হলো জহুরীর কাছে।
থলে থেকে নিক্তি বের করে মাপতে আরম্ভ করল সে।
ফলাফল দাড়াল খাঁটি সোনা আর ওজন পাঁচ ভরি চার রতি।
লজ্জায় মাথা চুলকাতে থাকল চেয়ারম্যান।

মিন্টু বলল, নিক্তি দিয়ে সারাজীবন পন্য মেপেছেন কখনও নিজকে মেপেছেন চেয়ারম্যান সাব!

কবির বলল, এ ধরনের ছোট লোকের সাথে বোনকে বিয়ে দেবনা, আপনারা আসতে পারেন।

মুখগম্ভীর করে বরযাত্রী বিদায় হলো।

খাবার দাবার শেষে কবির মিন্টুর হাতে আলোকে সারাজীবনের জন্য তুলে দিল।

আব্দুল মতিন_সম্পাদক,চেতনা বিডি ডটকম 

Leave A Reply

Your email address will not be published.