আবির ঢাকায় বড় পরিবারের সন্তান। গ্রামের মানুষের প্রতি তার ভীষণ টান। বাংলা কলেজে পড়তে এক বন্ধু মিলনের সাথে দারুন সম্পর্ক গড়ে উঠে ছিল। রাজশাহীর এক নিবিড় বাউসাতে বাড়ি মিলনের। পড়া শুনার পাশাপাশি গানের দখল আবিরের ভালোই ছিল।
মিলন আর আবিরের সম্পর্ক তাদের শিক্ষা জীবনের শেষেও অটুট ছিল। এখন আবির গান নিয়ে খুব ব্যস্ত। মঞ্চ প্রোগ্রাম ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় আর বেশ সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে । মিলন একদিন রাতে আবিরকে ফোন করল!
হঠাৎ করে মিলনের বিয়ে আবিরকে সামনে মাসের ১০ তারিখ বাউসা যেতে হবে। আবিরকে ছাড়া মিলনের বিয়ে কল্পনাই করে না মিলন।
হাতে মাত্র ১২ দিন সময়। এদিকে হারানো চিরকুট সিনেমার ২ টি গানের অফার পেয়েছে আবির। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গুছিয়ে নিয়ে আবির বাউসা যাত্রার প্রস্তুতি নিল।বন্ধুর বিয়ে বলে কথা তাছাড়াও এ অজুহাতে গ্রাম বাংলার প্রকৃতির সাথে মিশতে পারবে তাই মনটা ভরে উঠল অজানা আনন্দে।
বলতে বলতে মিলনের বিয়ের দিন ঘনিয়ে এলো বিয়ের আগের দিনেই আবির মিলনের বাসায় পৌছে গেল। মিলনের বাসার পাশে আতর মাস্টার মশাইয়ের বাড়ি,তারএকমাত্র মেয়ে কল্পনা। মাস্টার মশাইয়ের পুরো নাম আতাউর রহমান( আতর)। কল্পনা সবেমাত্র এইচ এস সি শেষ করল বলে। বিকেলে মিলনকে নিয়ে আবির ধান আর শরিসা ক্ষেতের মেঠো পথ পার হতেই চোখে পড়ল কল্পনাকে।
ভারি সাদামাটা স্বভাবের, সহজ- সরল, সূর্য কিরন যখন পাটে নামতে শুরু করেছে তখন সেই রোদ্দুরের ঝলকানিতে কল্পনা আবিরের কল্পনার রাজ রানী হয়ে উঠল। শিক্ষা, সাহিত্য আর সাংস্কৃতি নিয়ে আবির পুরো ব্যস্ত! এ সময়ই গ্রামের সতের বছর বয়সের গ্রাম্য মেয়ে কল্পনার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে আবির। বাহ! কত সুন্দর এ গ্রাম, বিদ্যা নিকেতনের পাশে মস্ত বড় দীঘি, মহিষ দিয়ে গাড়িয়ালদের পন্য বহন,সকালের পাখির কন্ঠে মধুর সূর, দীঘির শান্ত জল।সব মিলে প্রকৃতিতে ডুবে গেল আবির তার পরও কল্পনা।
কমল স্বভাব আর সুদূর প্রসারী দৃষ্টি আর সুন্দর মনন এসব গুণের সমারোহ আবিরের তাই কল্পনা আবিরকে না করবে তার সে সাহস হয়নি। মিলনকে আবির বলল ৫ দিন হজম করে ফেলেছি কাল ঢাকা যেতে হবে! এর মধ্যে তোর সাথে বড় একটা বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই।
মিলন সহযোগিতার আভাস দিয়ে বলল।
যা বলবে বল! আবির আতর মাস্টারের মেয়ে কল্পনাকে তা খুব পছন্দ হয়েছে তাই…..! আরে দোস্ত হা করতেই আমি বুঝে ফেলেছি। আচ্ছা দেখি কি করা যায় মিলন বলল।
আব্দুল মতিন – কবি সাহিত্যিক ও
সম্পাদক, চেতনা বিডিকম।