নিতাই নাথ খপ করে বাসন্তির হাতটা টেনে এনে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে বলল
” এই বাসু দ্যাখ তো আমার বুকডায় এমন করতাছে ক্যান?”
বাসন্তি এক ঝটকায় হাতটা টেনে নিয়ে বলল
” এই বুড়ো তুই এইহানে ক্যান আইছস? তোর বুকডায় ক্যামন করলে আমি কী করুম? আমি কি ডাকতর? না-কি তোর পেমিকা লাগি?”
নিতাই নাথ বাম হাত দিয়ে বুকের বাঁ-পাশটা চেপে ধরে ডান হাতের কুনুইতে ভর দিয়ে উঠে বসল
“এত ছ্যাতস ক্যান বাসু? একটু শান্তির জইন্য তোর কাছে আসি।”
” ছ্যাতুম না, কি করুম সোহাগ করুম? ক্যান তোর বউ নাই? হেই মাগি কি মরছে না-কি? ”
নিতাই নাথ বুঝতে পারছে এখানে কথা বাড়িয়ে আর লাভ হবে না। আজ বাসন্তি রেগে আছে। তার রাগ ভাঙানোর মতো শরীরের অবস্থা নেই। সে চটি জোড়া পায়ে ঢুকিয়ে আস্তে পা বাড়াল সামনের দিকে।
পেছন থেকে খপ করে ডান হাত ধরে বাসন্তি পুনরায় নিতাইকে চৌকিতে বসিয়ে দিল।
বাসন্তির চোখ ছলছল করছে, গলাটা ধরে আসছে। সে কোনো মতে কান্না সংবরণ করে বলল
” রাগ করলি? ক্যান রাগ করিস? তোর কষ্ট যে আমি সইতে পারি না। তুই বুকের ব্যাথা কইলে, আমার মনে হয় তুই আবার আপনজনদের কাছ থাইকা কষ্ট পাইছস। তোর হেই কষ্ট কমাইবার কোনো শক্তি যে আমার নাই।”
বাসন্তির চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে। নিতাই আলতো করে কাঁপা কাঁপা হাতে চোখের জল মুচে দেয়। নিতাই নাথের বুকের ব্যাথাটাও আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে। তার মন ভালো হয়ে যায়। তার কষ্টে একজন মানুষ কষ্ট পায়। তার জন্য চোখে জল, মনে মায়া, অন্তরে ভলোবাসা লালন করে। অথচ বাসন্তির সাথে নিতাইয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।
অষ্টাদশী এই কিশোরীকে ষাটোর্ধ নিতাই নাথ কি সম্পর্কে জড়াবে? তার শরীরের অর্ধেক প্রস্তুত হয়ে আছে চিতায় উঠার জন্য।
বাসন্তি মা হারা এক এতিম মেয়ে। এই জগৎ সংসারে তার বাবা ছাড়া আপন বলতে কেউ নেই। বাবা হরিনাথ বাবু হাটে নাপিতের কাজ করে। যা রোজগার হয়, তা দিয়েই বাবা মেয়ের কোনো মতে দিন কেটে যায়।
জন্ম থেকে বাসন্তি প্রতিবন্ধি। তার ডান পা বাঁকা। স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়। গরীর নাপিতের প্রতিবন্ধি মেয়েকে কেউ বিয়ে করতে চাইছে না। বাসন্তির জীবনে বাবা ছাড়া পুরুষ বলতে একমাত্র নিতাই নাথ।
নিতাই নাথ হরিনাথ বাবুর বাঁধা কাস্টমার। প্রতিমাসে সে চুল কাটায়, শেভ করে। যেদিন কোনো কাজ থাকে না, সেদিন এসে হরিনাথ বাবুর সেলুনে বসে থাকে। গল্প করতে করতে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। বেশির ভাগ গল্পই করত তারা তাদের যৌবনের সেই উদ্দোম দিনগুলো নিয়ে। জীবন যুদ্ধ হেরে যাওয়া নিয়ে।
মাস ছয়েক হবে হরিনাথ বাবুর বাম চোখে ছানি পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। একটি মাত্র চোখ দিয়ে তার আর নাপিতের কাজ করা হয় না।
সে বাড়িতেই থাকে। মানুষের সাহায্য সহযোগীতা নিয়ে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে বাবা মেয়ের দিন চলে যায়।
একদিন হরিনাথ বাবুর খোঁজ নিতে নিতে নিতাই নাথ এসে তাদের দুয়ারে দাঁড়ায়।
বাবার বন্ধু হিসাবে বাসন্তি নিতাকে আপ্যায়ন করে। কাকা বলে সম্বোধন করে।
গত মাসে বুকের ব্যাথায় বাবার মৃত্যুর পর সেই কাকাই আজ বাসন্তির সবচেয়ে প্রিয়জন। তাদের সম্পর্ক কাকা ভাতিজির মতো আর নেই। দিনে দিনে সেই সম্পর্কের গভীরতা বাড়ল। নাম না জানা এক নিষিদ্ধ সম্পর্কে রূপ নিলো।। এখন আর সে নিতাইকে কাকা ডাকে না। অধিকার নিয়ে কথা বলে। নিতাই ডাকে। তাদের সম্পর্কের কোনো নাম নেই। তারা চাচা, ভাতিজি নয়, তারা প্রেমিক, প্রেমিকা নয়, তারা বন্ধু নয়।
তাদের মাঝে অসময় বয়সে, নাম না জানা এক বিকৃত সম্পর্ক। যে সম্পর্ক সমাজের চোখে, জগতের চোখে বড্ড বেমানান আর দৃষ্টিকটু।
অথচ অসময় বয়সের এই লোকটার জন্য বাসন্তির মনে অনেক মায়া, অনেক মমতা, অনেক বালোবাসা।
সে বুক দিয়ে আগলে রাখছে, জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক নিতাইকে।
বাসন্তি কষ্ট পায় নিতাইর জন্য।
বাসন্তি নিতাইয়ের জন্য কষ্ট না পেলেও চলে। কারণ নিতাইয়ের ভরা সংসার। তার স্ত্রী আছে। ছেলে আছে, মেয়ে আছে, নাতি-নাতনি আছে। তার গোয়ালে গরু আছে, পুকুর ভরা মাছ অাছে, খেত ভরা ফসল আছে। কী নেই তার?
অথচ বেঁচে থাকার জন্য একজন মানুষের যেটুকু থাকার প্রয়োজন শুধু সেটাই নেই।
সম্মান নেই, ভালোবাসা নেই, মূল্যায়ন নেই, সংসারে তার অধিকার নেই।
অবাক হচ্ছেন, বিশ্বাস হচ্ছে না। একটু অপেক্ষা করুন বুঝিয়ে বলছি।
নিতাই কাজ করত শহরে, মাসে একবার বাড়ি আসত।বিশেষ কোনো কাজ নয়। রিক্সা চালাত, ঠেলাগাড়ি চালত, বোঝা বইত। মাঝেমধ্যে ভিক্ষাও করত। শুধু সংসারের উন্নতি হবে। ছেলে মেয়ে লেখাপড়া শিখে মানুষ হবে। সমাজে তার একটা অবস্থান হবে।
এসব করতে করতে ছাব্বিশ বছরে টগবগ যুবক এখন ষাটোর্ধ এক প্রৌঢ়।
সব হয়েছে তার। শুধু সংসার থেকে সে বিচ্ছন্ন হয়ে গেছে।
ষাট বছর পর গতরের শক্তি হারিয়ে বাড়ি ফিরে দেখে দু’চার মাস পরপর দুই একদিনের জন্য দেখা নির্মলার সাথে রোজ সংসার করা নির্মলার আকাশ পাতাল ব্যাবধান।
প্রতি সপ্তাহে, প্রতি মাসে বাবার কাছে টাকার জন্য হাত পাতা বেকার সন্তানের সাথে কর্মক্ষম সন্তানের উত্তর মেরু আর দক্ষিণ মেরুর তফাৎ।
বেহিসাবি টাকা নেয়া ছেলেটাও এখন বাবাকে হাত খরচের টাকা হিসাব করে দেয়। হিসাবের গড়মিল হলেও স্ত্রীসহ সন্তানের কটু কথা শুনতে হয়।
” বড্ড বেহিসাবি আপনে। নিজে তো রোজগার করেন না। উল্টা পোলার রোজগার বইয়া বইয়া খান।”
প্রাণধিক প্রিয় স্ত্রীর মুখে এমন কথা শুনে নিতাই নাথের বুকের মাঝে চিনচিনে ব্যাথা করে। যাকে সে আঠারো বছর বয়সে ঘরে এনেছে। যে ঠিক মতো পূজাটা পর্যন্ত দিতে জানত না। রান্না করতে জানত না, গুছিয়ে কথা বলতে জানত না। এমন নির্বোধ মেয়ে ছেলে ঘরের বউ হওয়ায় মা নিত্য ঘ্যান ঘ্যান করত। নিতাই ভালোবাসা দিয়ে সংসারের জটিলতা থেকে আগলে রেখেছিল নির্মলাকে।
নিতাই পড়ে থাকত পথে প্রান্তরে , যেখানে বৈদ্যুতিক পাখা ছিল না। সেই অভ্যাস নিতাইয়ের এখনো রয়ে গেছে। এখন আর পাখার নিচে সে ঘুমাতে পারে না। ঠাণ্ডা লেগে যায়, বুক ভার হয়ে যায়। বারবার ঠাণ্ডা লাগার অজুহাতে ফ্যান বন্ধ করে দিলে
“বাবাটা বড্ড সেকেলে ”
বলে ছেলের বউ ভৎসনা করে। লজ্জিত বদনে নিতাই নির্মলার দিকে তাকায়।
সে আশা করে পুত্রবধুকে থামিয়ে দিয়ে নির্মলা স্বামীর পক্ষে অবস্থান নেবে।
” খবরদার তোর শ্বউররে এসব কতা কইবি না। পাঙ্খা আসলে বালা জিনিস নয়। এসব ব্যারাম।”
কিন্তু না নির্মলা এসব বলে না, উল্টো বউয়ের সাথে তাল মিলায়।
” বাপু গরমে মাইনষের জান যায়। পাঙ্খা না সহ্য করলে পুজোর ঘরে থাকবার কয়। ওই হানে পাঙ্খা নাই।”
স্ত্রীর এমন অপরিচিতের মতো আচরনে নিতাই নাথের বুকের মাঝে আগের মতো চিনচিনে ব্যাথা করে।
একটা ধূতি, পাঞ্জাবি পরে বছরের পর বছর কাটানো নিতাই, পূজাপার্বণের দোহাই দিয়ে প্রতি মাসে কাপড়চোপড় কেনা তার পছন্দ নয়। নতুন কাপড় রঙ জ্বলে গেছে, ছিঁড়ে গেছে অজুহাতে ছেলের বউ, নির্মলা ফেলে দিলে নিতাইর বড্ড কষ্ট হয়। তবুও কিছু বলে না। কিন্তু নানান অজুহাতে নিতাইয়ের জন্য পোষাক কিনলে সে বারন করে।
একই ধূতি, পাঞ্জাবি পরে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি বারবার গেলে মেয়ে অর্চনা রাগ করে
” বাবু তুমি হয় নতুন ধূতি কিনবা, নইলে আমার শ্বউর বাড়ি আইবা না। তোমার লাইগা সম্মান থাহে না।”
ছলছল চোখে নিতাই নাথ মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। মেয়ের মুখে বাবার জন্য কোনো ভালোবাসা নেই, কোনো মমতা নেই। বরং অগোছালো বাবার প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা।
এই ঘৃণা, বিতৃষ্ণা নিতাই নাথ নিতে পারে না, তার বুকের ভেতর ব্যাথাটা আবার চিনচিন করে বাড়তে থাকতে।
অথচ এই মেয়েটাকে ভালো ঘরে বিয়ে দিতে গিয়ে মোটা অংকের যৌতুকের টাকা পরিশোধ করার জন্য সেইবার প্রথম নিতাই নাথ ভিক্ষা পর্যন্ত করেছেন শহরে।
মেয়ে ভালো থাকবে, সুখি হবে। মেয়ের ভালো থাকার জন্য বাবা না হয় একটু ভিক্ষাই করল।
কত বছর নিতাই মেয়ের বাড়ি যায় না। মেয়েও কখনো ফোন করে বাবার খোঁজ খবর নেয় না। মায়ের সাথেই তার সব সখ্যতা।
বাবা পূজা মন্ডপে চাঁদা দেয়, দোকানে বন্ধু-বান্ধবকে চা খাওয়া। বাবাকে এত টাকা হাত খরচের জন্য দিতে হয় বলে ছেলে নাখোশ। ইচ্ছে করেই বাবাকে এড়িয়ে যায়। কখনো কথা বলতে চাইলে ভীষণ বিরক্ত হয়।
” বাবু তুমি কোনো তীর্থে যাইবার পারো না? তাতে একটু ধম্মকম্ম পালন অইব। এত বন্ধু-বান্ধবের কী কাম! শুধু ট্যাহা খরচ।”
ছেলের কথা নিতাই নাথের বুকের ভেতর সূচের মতো বিঁধে। চিনচিনে ব্যাথা সে সহ্য করতে পারে না।
অথচ এই ছেলের মেট্রিক পরীক্ষার ফরম-ফিল আপের টাকা জোগাড় করার জন্য সে রাত ভোর রিক্সা চালিয়েছে। সেই ছেলে এখন…..।
বাধ্য হয়ে ষাটোর্ধ নিতাই নাথ পুনরায় হাতে তুলে নেয় রিক্সার প্যাড়েল। সেখানেও সমাজের বিত্তবান ছেলে মেয়ের আপত্তি।
” আপনে কী শক্রুতা শুরু কইরলেন। এত ট্যাহা দি আপনে কি কইরবেন। সম্মান নিয়ে বাঁচবার দিবেন না পোলাগোরে!”
স্ত্রীর কণ্ঠে রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা ঝরে পড়ে। সারাজীবন বাড়ি ছাড়া লোকটা যেন নিজের বাড়িতেই পরবাসী হয়ে গেল।
নিতাইরে কণ্ঠ ধরে আসে। বুকের ভেতর চিনচিনে ব্যাথাটা বাড়তে থাকে।
সে বাধ্য হয়ে দিনের বেশির ভাগ সময় হরিনাথ বাবুর সেলুনে বসে নানা কিসিমের মানুষের সাথে গল্প করে কাটিয়ে দিত সময়।
নিজের সব থেকেও সব কিছু নেই হয়ে গেল নিতাই নাথের। দূরে থেকে কাজ করা, চাকরি করা, ব্যাবসা করা পুরুষগুলো একটা সময় নিজের রক্ত জল করে সাজানো সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাকে পরিবারের লোকজন টাকা তৈরির মেশিন ছাড়া আর কিছুই মনে করে না। বেকার হয়ে গেলে নষ্ট মেশিনের মতো করেই সংসারে তার অযত্ন, অবহেলাও শুরু হয়। নিঃসঙ্গতা যখন অাষ্টেপৃষ্ঠে, রন্দ্রে,রন্দ্রে স্থায়ী বাসা বাঁধল। তখন দেখা মিলল বাসন্তির সাথে। যে তার মেয়ের চেয়েও কম বয়সী। যে তাকে কাকাবাবু বলে সম্বোধন করত।
একটা নারীর সংস্পর্শ, একটা নারীর ভালোবাসা পাওয়ার লোভে যে শহরের রাস্তায় সংযম করে কাটিয়ে দিয়েছে। স্ত্রী, কন্যা, পুত্রবধু থাকার পরও সেই নারীর মমতা থেকে নিতাই নাথ বঞ্চিত হয়েছে।
সে সংসারে প্রিয়জনের কেবল বঞ্চনার শিকার হয়েছে। রূঢ়, নিষ্ঠুর আর স্বার্থপর রূপ দেখেছে সে নারীর।
এদিকে সবুজ ঘাসের মতো নরম, ফুলের মতো পবিত্র, সমুদ্রের জলের মতো স্বচ্চ বাসন্তি। যার অন্তরে পাহাড়সম মমতা, সমুদ্রসমান ভালোবাসা। যে পরপুরুষ নিতাই নাথকে যত্ন করে, গল্প করে, পাশে বসিয়ে পছন্দের খাবার রেঁধে খাওয়ায়।
নিতাই নাথ নিজের সংসার থেকে উপেক্ষিত হয়ে বাসন্তির কাছে চলে আসে।
কষ্টের কথা শেয়ার করে। বাসন্তি ভালোবেসে কষ্ট দূর করে দেয়।
পিতৃহারা, মাতৃহারা বাসন্তিকে একটা স্বীকৃতি দিতে নিতাই নাথের বড্ড ইচ্ছে করে। কারণ রাত বিরাতে নিতাই নাথের বাসন্তির ঘরে আসা গ্রামবাসী পছন্দ করছে না। যতদিন বাসন্তির বাবা হরিনাথ বাবু বেঁচে ছিলেন, লোকে কিছু বলত না।
ইদানিং বড্ড কানাঘুষা করছে গ্রামবাসী। গ্রামবাসীর কানাঘুষায় গঙ্গার জল ঢেলে দিয়ে তাকে ঘরে তুলতে ইচ্ছে করে। কিন্তু ভয় হয় চাল-চুলোহীন, বেকার, অসুস্থ বুড়োকে বিয়ে করে কি পারে বাসন্তি?
এদিকে তার স্ত্রী আছে, ছেলে আছে, মেয়ে আছে, সংসার আছে।
হয়তো সে সংসারে মানুষ হিসাবে তার মূল্যায়ন নেই। কিন্তু নিতাই তো ইচ্ছে করলে এই শৃঙ্খলা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না।
ফুলের মতো নিষ্পাপ মেয়েটার জীবনে তার কারণে কোনো বদনাম নেমে আসুক নিতাই নাথ সেটা চায় না। আবার বুকের চিনচিনে ব্যাথার অজুহাতে হলেও সে বাসন্তির কাছে না গিয়ে থাকতে পারে না।
তাই নিজের জীবন থেকে পালিয়ে যেতে নিতাই বাক্স প্যাটরা নিয়ে রওনা হলো তীর্থে যাওয়ার জন্য। পথিমধ্যে সে একবার বাসন্তিকে দেখতে যেতে চেয়েছিল। না এই সংসারে কোনো মায়ার বাঁধনে আর সে জড়াবে না। কারণ আগামীকাল বাসন্তির বিয়ে। গ্রামবাসী এতিম মেয়েটার একটা বিয়ের ব্যাবস্থা করেছে। কষ্ট বুকে চেপে বাবার বিশেষ পরিচিত বন্ধু হিসাবে নিতাই সে বিয়েতে সায় দিয়ে এসেছে।
কামরুন নাহার মিশু -কবি ও সাহিত্যিক।