ধুমকেতুর বাঁশি বেজে চলেছে মাঝে মাঝে। ডাউন হলো যমুনা সেতু পশ্চিম স্টেশনে।
মনে পড়ল, সেতু তৈরির সবচেয়ে বড় হুন্দাই কোম্পানীর কথা।
দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক মি. হুন্দাই কত বড় ধনী মানুষ।
এই তো দেড় যুগ আগে নিজ বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পরে আত্মহত্যা করেছিলেন।
সুইসাইড নোটে বলেও ছিলেন ” পৃথিবীতে শান্তি নেই। ”
শান্তি বিধাতার শ্রেষ্ঠ নেয়ামত এই সুন্দর পৃথিবীর মানুষের জন্য।
মায়া কিছুটা গম্ভীর হয়ে রয়েছে।
ভাবছে সুন্দর ক্যারিয়ার আর নিয়তির পরাজয়ের কথা।
আমি ডাক্তারনীকে কয়েকটি কথা বললাম,
মানব জীবনে কিছু স্বপ্ন বাস্তবতার কারণে অপূর্ণ থেকে যায় আর এটিই জীবন।
“ভোগে সুখ নেই, ত্যাগে প্রকৃত সুখ।”
আমার জীবনেও এমন কিছু অতীত আছে যা হামেশা কষ্ট দিয়ে যায়।
রবি ঠাকুরের একরাত্রি গল্পের কথা বললাম।
কাজলও ডাক্তারনীকে হয়তো ভাবছে।
মানুষের লুকানো কিছু প্রেম, স্বপ্ন, পরিকল্পনা থাকে।
সামাজিক পরিবেশ আর পরিবারের নিষ্ঠুর সিদ্ধান্তে সবকিছুই ম্লান হয়ে যায়।
আজ দুজনার দুটি পথ
দুটি দিকে গেছে বেঁকে।
কাজল এখন কোথায়? আমি জিজ্ঞেস করলাম।
– ও চট্টগ্রামে আছে। আগে নিয়মিত কথা হলেও এখন হঠাৎ করেই কথা হয়।
বিয়েতে কাজল আসবে না?
– আসবে হয়তো! ওর মাথায় এখন বিসিএস ভাবনা।
আচ্ছা, কাজলকে “পুষ্প বৃক্ষ ও বিহঙ্গ পুরান ” বইটা গিফট করবে।
– আপনার সাথে কথা বলে খুব ভালো লাগলো।
অনেক কাজের ভিড়ে নিজেকে নিয়ে ভাবাই হয় না।
কখনো সময় হলে গাজীপুরে আসবেন – বলে মোবাইল ফোন নম্বারটা ধরিয়ে দিল মায়া।
দেখতে দেখতে গাজীপুর ঢুকে পড়লাম।
মায়াকে শুভকামনা জানিয়ে আন্তরিকতার সাথে বিদায় জানালাম।
সাড়ে চার ঘন্টার এ যাত্রায় চিকিৎসক, চিন্তাশীল, বিচক্ষণ, প্রসস্ত মনের অধিকারীনি এক মেয়েকে দেখলাম।
কত নিষ্পাপ, পরিচ্ছন্ন আর অমায়িক ব্যবহার তার।
মায়ার ফ্রেস তখনও আমার নয়ন থেকে মুছেনি, হঠাৎ আধা ঘণ্টা আগে সেভ করা মায়ার নম্বার থেকে ফোন এলো।
কোন এক রিকশা চালক বলছে – আফনে কেডা? ম্যাম এক্সিডেন্ট কইরা আস্তায় পইড়া রইচে!
……… ( চলবে)
আব্দুল মতিন-সম্পাদক,চেতনা বিডি ডট কম