Take a fresh look at your lifestyle.

ধর্মবোধ

438

কর্ণাটকের ভিডিওটা গতকাল দেখেছি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সংবাদগুলোও দেখছি। বি.কম সেকেন্ড ইয়ারে পড়া বিবি মুস্কানের সাথে যা ঘটলো তা সত্যিই দুঃখজনক। আমার মনে কতগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

১. এটা কী বিচ্ছিন্ন ঘটনা?

ক. যদি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয় তাহলে প্রায় দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী একই গেরুয়া স্কার্ফ হঠাৎ করে কোথা থেকে পেলো?

খ. তাদের সবার মুখে জয় শ্রীরাম শ্লোগান কেন? তারা তো ধর্মীয় পোশাকের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছে, তাহলে নিজেরা ধর্মীয় শ্লোগান দিচ্ছে কেন?

২.

ক. যারা হিজাবের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছে তাদের মধ্যে অনেকের মাথায় পাগড়ীর মতো পরা আছে। বোঝাই যাচ্ছে তারা শিখ। তাহলে তারা কেন ধর্মীয় পোশাক পরা?

খ. অনেকের হাতে বিপদতাড়িনি তাগা বাঁধা। রাখির মতো সুঁতো প্যাঁচানো। বোঝা যায় তারা হিন্দু। তাহলে তারা কেন ধর্মীয় পোশাক বা সংস্কৃতি বহন করছে?

গ. তাদের শিক্ষকদের মধ্যে এবং উঁচু ক্লাসের ছাত্রীদের কারো কারো কপালে সিঁদুর পরা। এটা কী ধর্মীয় পরিচয়ে তাদেরকে আলাদা করছে না?

আপনারা বলতে পারেন, এটা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমার প্রশ্ন হলো-

বাংলাদেশে যখন কুচক্রী উগ্রবাদী কেউ ধর্মীয় সহিংসতা বা উস্কানি ছড়ায় তখন এটাকে আপনারা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলতে নারাজ হন কেন?

বাংলাদেশে অমুসলিমদের উপর কোন ধরণের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে আমরা লজ্জায় নিজেদের ধিক্কার দিই এবং দিবোই। আমরা সব সময় নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াই, দাঁড়াবোই। ধর্মীয় গোঁড়ামিকে আমরা কখনও প্রশ্রয় দিই না, দিবো না।

বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম নির্দেশ দেয় সকলের ধর্মকে শ্রদ্ধা জানাতে।

কর্ণাটকে যা ঘটলো, তা এখনই বন্ধ করা উচিত। বোঝা যাচ্ছে, সামনের নির্বাচনে সুবিধা পেতে ভারতে ধর্মীয় উস্কানি ছড়াচ্ছে একটি দল। ধর্ম নিয়ে এই নোংরা খেলা যে কোন জনপদের জন্যেই দুঃখজনক। এটা বন্ধ হওয়া উচিত।

বাংলাদেশে এই নোংরামির কোন প্রতিক্রিয়া যেন না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের সকলের সচেতন হতে হবে।
ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ সবার। এদেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। বিশেষ করে যারা উদার ধর্ম ইসলাম মেনে চলি, তাদেরকে শান্তি রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ইসলামকে মানবিক ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করার দায়িত্ব আমাদের সকল মুসলিম ভাইবোনের।

 

আসাদুজ্জামান জুয়েল- কবি,সাহিত্যিক ও গবেষক। 

Leave A Reply

Your email address will not be published.