নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করে প্রায় সময়ই। আমার এই ইচ্ছাটা মনের মধ্যে মাঝে মাঝে খুটখাট করে ওঠে। মন চায় ছুটে চলে যাই আমার সেই সবুজে ঘেরা গ্রামের বাড়িতে।যেখানে আমার জন্ম,আমার বেড়ে ওঠা।যেখানে আছে হৃদয় জুড়ানো সবুজ ঘাস আর সবুজ মাঠের শীতল পড়শ।
বড় বাড়ি, বাড়ির সামনে অনেক বড় লিচু গাছ।বড় পুকুড়, বিশাল মাছ,বাটা মশলার তরকারী কত রকমের ফলের গাছ,চালতা গাছের মিষ্টি চালতা আর কাঁঠাল গাছের রসালো কাঁঠাল। কোথায় হারিয়ে গেছে সব! মনে পড়ে ঘুটঘুটে অন্ধকারে হারিকেন নিয়ে কাদা মাখা পথ চলা।সবই এখন স্মৃতি। স্বপ্ন ছিল আমি থাকব আকা বাকা মেঠো পথে ঘেরা গাঁয়ে, যেখানে আমার ছোট্ট একটা কুটির থাকবে। ক্লান্ত হয়ে গেলে জিরিয়ে নেব গাছের ছায়ায়।
জীবনের কোন একটা সময় বুঝতে পারি আমার স্বপ্নের বাড়িটা স্বপ্নেই থেকে যাবে। তাই
স্বপ্নের বাড়িটাকে কত যত্নে সেলাই করে ছবির ফ্রেমে বেঁধে দেয়ালে ঝুলিয়ে রেখে জীবন জীবীকার প্রয়োজনে ইট পাথরের দালানে ঠাসা শহরে বাস করছি। আর যখনই মন খারাপ হয় তখনই আমি আমার এই স্বপ্নের বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়াই। কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখি। এক ধরনের প্রশান্তি লাগে যা বলে বুঝাতে পারব না।
এখন সময় হয় না আর বাড়ি যাবার। আর যদি কখনো সুযোগ হয়ে ওঠেও বাড়িতে যাওয়ার, গিয়ে খুঁজে পাইনা আমার প্রিয় সেই মানুষ গুলি। নেই আর কাদামাখা পথ, ঘুটঘুটে অন্ধকার। হারিকেন গুলো কোথায় আছে তার খবর নাই। বড় পুকুর আছে যেখানে শেওলা জমে গেছে।
একদিন হয়ত আমি আমার স্বপ্নের বাড়ি ফিরব সেদিন সময় থেমে যাবে। যখন জীবন ঘড়ির কাটাটি পৌঁছে যাবে নির্দিষ্ট সময়সীমায়….!
মাহাফুজা শিরিন – সাহিত্যিক ও এডমিন চেতনায় সাহিত্য ।