Take a fresh look at your lifestyle.

বুক রিভিউ / নীল হাতী

651

 

বইয়ের নামঃ নীল হাতী
লেখকের নামঃ হুমায়ূন আহমেদ
প্রকাশকঃ অন্বেষা প্রকাশন
প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ
মূল্যঃ ১৩৫/-
পৃষ্ঠাঃ ৫৪

শিশু সাহিত্যের অনন্য রচনা ছোটোদের গল্প।
এ সেক্টরে হুমায়ূন আহমেদ চমৎকার কিছু কাজ করেছেন।

নীল হাতী এরকম একটি অসাধারণ শিশুতোষ গ্রন্থ।
সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের এক দৃষ্টি নন্দন আলোকচিত্র ” নীল হাতী “।

নীলুর মামাকে সে দেখেনি, জন্মের পূর্বেই সে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছে। সেখানেই এক মেমসাহেবকে বিয়েও করেছে।

পরিবারের সদস্যদের হাজারো অনুরোধে তাকে স্বদেশে আনা যায় নি। বেঁচে থাকতে প্রবাসী সঞ্জু এ দেশে আসবে এটা কেউ বিশ্বাস করে না।
নিলুর ভীষণ ইচ্ছে তার মামা-মামীকে দেখবে।
তাই নিলু ছোট্ট করে চিঠি লিখেছে-

মামা,
আপনি কেমন আছেন? আমার নাম নিলু।
আপনাকে আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করে। আর মেমসাহেব মামীকে দেখতে ইচ্ছে করে।
ইতি
নিলু

চিঠির কোন উত্তর এলোনা। অনেক দিন পার হয়ে গেছে – চিঠির কথা নিলুর মনে নেই।

নিলু কৈশোরে অবতীর্ন। আজ স্কুলে যাইনি। ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া, গলায় মাফলার জড়িয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।
হঠাৎ ডাকপিয়ন ছাতা মাথায় বাড়ির ভিতরে এলে।

পিয়ন জিজ্ঞেস করলো, নিলু নামের কে আছে! অবাক হয়ে নিলু জানালো! সেই নিলু।

আমেরিকা থেকে একটা গিফট এসেছে।
নিলু সই করে গিফট বক্স খুলে ফেললো পিয়নের সামনে।

চোখে পড়লো নীল হাতী।
বাহ! হাতী সুন্দর করে কান নাড়ে, শুঁড় উঠানামা করে, নীল মায়াবী হাতী।

কদিন ধরে এ হাতিটার প্রতি দূর্বল হয়ে গেছে নিলু।
সবসময় কাছে রাখতে চাই, রাতে সাথে নিয়ে ঘুমাতে চাই নিলুর।
মা এখন শোকেসে রেখেছে নীল হাতী।

একটু পর পর নিলু হাতি দেখতে যাই। হাতীটি শুঁড় নাড়ে কিনা/ কান নাড়ে কিনা / গলায় রুপার ঘন্টা মৃদু মৃদু বাজে কিনা।
উঠতে, বসতে, খেতে,ঘুমাতে, খেলতে হাতীটি স্মরণ তাকে ব্যকুল রাখে।
প্রতিবেশী, বন্ধু, হাউজ টিউটর, আত্মীয় সবাইকে নিলু সেই নীল হাতীটার কথা বলে।
সবার নজরে পড়েছে যখন নীল হাতী ঠিক তখনই নিলুর মায়ের এক বান্ধবী বেড়াতে এলো তাদের বাসায়।
উনার এক ছেলে ছোট্ট টিটো!
টিটো এ বাড়িতে আসার পর থেকে গগনবিদারী কাঁন্না।
হাত,পা উঁচিয়ে ছটফটিয়ে কাঁন্না।
টিটো কখনো ঘিনঘিন করে কাঁদে কখনো ট্যাঁ-ট্যাঁ করে।

নিলুর মা বলছে-
বাবা টিটো, ছবির বই দেখবে?
মিষ্টি / চমচম খাবে?
উহুঁ
কিছুতেই থামতে চাই না।
হঠাৎ
নিলুর মা বলে উঠলো!
ঐ নীল হাতীটা নিবা টিটো!

ওমনি নিলুর বুক চিনচিন করে উঠলো।
ওমা! নীল হাতীর কথা শুনে, শুঁড় নাড়ানো দেখে টিটো থেমে গেল।

অনেক সময় খেললো টিটো।
বাড়ি যাবার কালে টিটো ঐ হাতীটা নেবে!
নিলুর মা বলছে, ছিঁ ওটা ভালো নয়।
নিলুর কান্না আসছে কিন্তু এমন মেয়ে কাঁদলে সবাই কি বলবে।
নিলু এবার ছাদে উঠে এসেছে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে নিলু।

মা এসে বলছে, নিলু ওটা খেলনা
সাধারণ একটা জিনিস
মামাকে চিঠি লিখে দিও, আরো সুন্দর হাতী পাঠাবে।

নিলু সারা সন্ধ্যা কারো সাথে কথা বললোনা, ঠিকমতো খেলো না।
সবার ঘুমিয়ে পড়েছে কিন্তু নিলুর বারবার মনে পড়ে সেই নীল হাতীর কথা।
মধ্য রাত হঠাৎ বাইরে টুন টুন শব্দ শুনতে পেল নিলু।
টুল জোড়া দিয়ে সিটকলি খুলে বাইরে গেল সে।
আশ্চর্য হলো নিলু হাতী তার সাথে কথা বললো, আনন্দে বিমোহিত হলো নিলু।
সবাইকে ডাকাডাকি করে বাড়ি মাথায় তুললো।
আসলে টিটোর হাত থেকে বাসার বাইরে নীল হাতী পড়ে গিয়েছিল।
নিলুর হাতে ফিরে এলো সে।

এমন আকর্ষণীয় তিনটি গল্পের সমন্বয়ে রচিত এ গল্প।

নীল হাতী
একটি মামদো ভূতের গল্প
আকাশ পরী

এ তিনটি গল্পের রস নিতে পড়া দরকার এ

” নীল হাতী “।

 

আব্দুল মতিন – সম্পাদক,  চেতনা বিডি ডটকম। 

Leave A Reply

Your email address will not be published.