গত পর্ব শেষ হয়েছিলো কোলন ক্যান্সারের প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে আলোচনা দিয়ে। আজ এই ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে জীবন পদ্ধতির পরিবর্তনের কিছু পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
মূলতঃ ক্যান্সারের চিকিত্সার লক্ষ্য হ’ল ক্যান্সার অপসারণ,এর বিস্তার রোধ করা এবং অস্বস্তিকর লক্ষণগুলি হ্রাস করা। কিন্তু আমরা যদি সচেতন না হই তাহলে দেখা যাবে এই রোগটি নিজের অজান্তে আমাদের দেহে প্রবেশ করবে এবং জীবনকে মৃত্যর ঝুকিতে নিয়ে যাবে। তাই কোলন ক্যান্সারের এবং সব ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরী। আপনার প্রতিদিনের জীবনে পরিবর্তন করে কোলন ক্যান্সারসহ সকল প্রকার ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করার পদক্ষেপ নিতে পারেন। পদক্ষেপগুলো হলোঃ বিভিন্ন ফলমূল, শাকসবজি এবং পুরো শস্য খান। ফল, শাকসবজি এবং পুরো শস্যগুলিতে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। বিভিন্ন ফলমূল এবং শাকসব্জী বেছে নিন যাতে আপনি ভিটামিন এবং পুষ্টিগুন পান। যথাসম্ভব অ্যালকোহল পান বন্ধ করুন। ধূমপান বন্ধ করুন। এসব অভ্যাস ছাড়ার উপায়গুলি সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন যা আপনার পক্ষে কার্যকর হতে পারে। সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন ব্যয়াম করুন। বেশিরভাগ দিন কমপক্ষে 30 মিনিটের ব্যয়াম করার চেষ্টা করুন। আপনি যদি নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকেন তবে আস্তে আস্তে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে 30 মিনিট পর্যন্ত আপ করুন। এছাড়াও, কোনও অনুশীলন প্রোগ্রাম শুরু করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখাঃ. আপনি যদি স্বাস্থ্যকর ওজনে থাকেন তবে প্রতিদিনের ব্যায়ামের সাথে স্বাস্থ্যকর ডায়েটের সমন্বয় করে আপনার ওজন বজায় রাখার জন্য কাজ করুন। যদি আপনার ওজন হ্রাস করতে হয় তবে আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্বাস্থ্যকর উপায় সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করুন। আপনার প্রাপ্ত ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে এবং আপনার খাওয়া ক্যালোরির সংখ্যা হ্রাস করে ধীরে ধীরে ওজন হ্রাস করার লক্ষ্যে পৌঁছান।
লেবু আর উষ্ণ জল: বিশেষজ্ঞদের মতে, (জাপানি একজন চিকিৎসক) অন্যান্য খাবারের তুলনায় উষ্ণ গরম জলেতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস যে কোন ক্যান্সারের জন্যে অনেক উপকারী। তাই অন্যান্য পানীয়ের চেয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। (আমি ব্যক্তিগতভাবে এই অভ্যাস করছি।) শুধু লেবুর রস গরম পানিতে খেতে না পারলে একটু খাটি মধু মিশিয়ে নেবেন। তবে এক্ষেত্রে লবন ও চিনি একদম ত্যাগ করবেন। রান্না করা খাদ্যতে লবন কম দেবার অভ্যাস করে ফেলুন।
গ্রিন টি: গ্রিন টি-এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেল টক্সিসিটি দূর করে এবং আমাদের লিভার পরিষ্কার রাখবে, যে কোন ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। প্রতিদিন এক থেকে দু কাপ গ্রিন টি পান করার ফলে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট দূর হয়ে যায় এবং গোটা শরীরের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো সঠিক ভাবে কাজ করতে সক্ষম হয়। (এটিও পরীক্ষিত)
রসুন: রসুনে রয়েছে সালফারের উপাদান তাই প্রতিদিন অন্তত এক কোয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কাঁচা রসুন খেতে পারলে খুব ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।
প্রতিদিন খালি পেটে কালো জিরে খান। বিভিন্ন ধরনের ডাল, বিচি জাতীয় খাদ্য, ফল খান, এ্যাপেল খান বিচি সহ, আঙ্গুর বিচিসহ খান, দেশী পেয়ারা এবং সবধনের ফল খান, তবে ডাইবেটেস থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খান।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: দিনে প্রায় ৭-৮ গ্লাস (২.৫ লিটার থেকে ৩ লিটার) পানি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন। আমাদের দেহের প্রায় ৭০ শতাংশই হল পানি। তাই সচেতনতা অবলম্বন করা জীবনে জন্য আমাদের কর্তব্য। অতিরিক্ত বাসি খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। শুধু পান খেতে পারেন পরিমানমত। তবে সুপারি জর্দা, সাদা, তামাক একদম ছেড়ে দিন। দুঃশ্চিন্তামুক্ত থেকে নিজ নিজ ধর্মীয় কাজ সুষ্ঠুভাবে আদায় করুন। দেখবেন মানসিক শান্তি পাবেন আর মানসিক শান্তি কিন্তু শরীরের জন্যে একটা মহাঔষধ।
বাজারের পানীয় যেমনঃ কোকাকোলা, পেপসি ও এজাতীয় অন্যান্য পানীয় সম্পূর্নভাবে ত্যাগ করুন, অনুগ্রহ করে আপনার বাচ্চাদের হাতে চিপসের প্যাকেটটি তুলে দেবেন না
আজ এ পর্যন্ত। আগামী পর্বে সামান্য কিছু পরামর্শ এবং অনুরোধ নিয়ে এর ইতি টানার আশা করি। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের পর্ব শেষ করছি। পর্বটি পড়ুন এবং অন্যকে পড়তে উৎসাহিত করুন।
রওশন চৌধুরী – সহ সম্পাদিকা চেতনা বিডি ডটকম।