গত পর্ব শেষ করেছিলাম ক্যান্সারের কিছু লক্ষন নিয়ে আলোচনা এবং এমন লক্ষণ দেখা দিলে কি করা উচিৎ তার কিছু ধারণা দিয়ে।
আজকের পর্বে জেনে নেবো ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করার কিছু কথা।
মানুষ যেসব কঠিন রোগে ভোগে তার মধ্যে ক্যান্সার সবচেয়ে কঠিন রোগ। ক্যান্সার শরীরে একবার বাসা বেঁধে ফেললে রোগীকে বাঁচিয়ে ফেরানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। ক্যান্সার হলে আরও বিভিন্ন রোগ চেপে বসে শরীরে। তখন রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা একেবারে দুঃসাধ্যই হয়ে যায়। তবে আগেই উল্লেখ করেছি যে কেউ যদি প্রাথমিক পর্যায়ে এই মরণব্যাধি শনাক্ত করতে পারে, তার বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানিই উজ্জ্বল থাকে।
ক্যান্সার বিজয়ী ও চিকিৎসক ইয়ান গালার পরামর্শ দিয়েছেন, দুঃখ করার চেয়ে নিজেকে সুস্থ রাখাই দরকার বেশি। তাই শরীরে কোনো অসুস্থতা দেখা দিলে, বিশেষত উদ্বেগজনক কোনো উপসর্গ বোঝা গেলে, অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আগের পর্বে উল্লিখিত উপসর্গগুলোকে ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ মনে করা হয়। তবে এর বাইরেও অনেক লক্ষণ আছে ক্যান্সারের। এগুলোর মধ্যে আছে শরীরের আকারে বা অনুভূতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ইত্যাদি।
সবশেষ কথা হলো, ক্যান্সারের অনেক কারণ বোঝাও যায় না, এমনকি অন্য ক্যান্সারের চিকিৎসার পরবর্তী পরিণতি হিসেবে আরেক ক্যান্সার দেখা দেয়। তাই শরীরের যেকোনো অসুস্থতাকেই গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে। বিশেষ করে বয়স ৩০-৪০ বছর পেরিয়ে গেলে অবশ্যই বছরে একবার অথবা দুইবার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
আশার কথা এই যে, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে পারলে বেশিরভাগ ক্যান্সারেরই চিকিৎসা সম্ভব। এমন ক্ষেত্রে উদাহরণস্বরূপ আমি নিজে, আমার প্রিয় লেখক “ ইয়ান গালার” বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, বলিউড অভিনেত্রী মনিষা কৈরালা বা ভারতের ক্রিকেটার যুবরাজ সিং এরা কিন্তু ক্যান্সার জয় করে দাপটের সঙ্গেই ফিরেছেন স্ব স্ব অঙ্গনে। এবার তা হলে একটু জেনে নেই এর প্রতিরোধে আমাদের কিছু প্রচেষ্টা কি কি হতে পারে। এখানে আমি কিছু হাদিস এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। বাকি সবই মহান আল্লাহর হাতে।
ক্যান্সার প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়ঃ
১। হাদীসে এসেছে, “কালোজিরাতে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ রয়েছে”। গবেষণা বলছে, কালোজিরাতে ‘ক্যারোটিন’ নামক ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান রয়েছে। তাই ক্যান্সার যাতে না হয়, সেজন্য নিয়মিত কালোজিরা খান। আবার ক্যান্সার যাতে ভালো হয়ে যায়, সেজন্যও নিয়মিত কালোজিরা খান।
২। রঙিন খাবার ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ থেকে দূরে থাকবেন।
৩। সতেজ ফলমূল বেশি খান, কারণ ফলমূল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪। কখনো ধূমপান বা মদ্যপান করবেন না।।
৫। পান, সুপারি, জর্দা এবং অতিরিক্ত লবণ খাবেন না।
৬। নিয়মিত শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রম করবেন।
৭। রাসায়নিক পদার্থ, রঙ, রাবার, গ্যাস ইত্যাদি থেকে দূরে থাকবেন।
৮। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সূর্যের রোদ থেকে দূরে থাকবেন।
৯। টিউমার বা অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন দৃষ্টিগোচর হলে, অতিসত্বর একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই নিয়মিত কালোজিরার ভর্তা দিয়ে ভাত খেতে ভুলবেন না কিন্তু।
(চলবে, ততক্ষন পর্যন্ত পড়ুন আজকের পর্ব। পরের পর্বে থাকবে বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার নিয়ে একটু ধারণা। ততক্ষণ পর্যন্ত পড়ুন এবং সাথেই থাকুন।) আল্লাহ মহান সবাইকে সুরক্ষিত রাখুন।
রওশন চৌধুরী- সহ সম্পাদক চেতনা বিডি ডটকম।