একশ্রেণীর বুদ্ধিমান প্রাণীরা ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, মানুষের মনে আতংক তৈরী করে তাদেরকে ভ্যাকসিন গ্রহনে নিরুৎসাহিত করতে চাচ্ছেন। এটা ঠিক যে এটিই পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ে উৎপাদিত ভ্যাকসিন। এটি কোনো সাধারণ পরিস্থিতি নয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একেবারে নিখুঁত ভ্যাকসিন পেতে হলে আরো অনেক সময়ের প্রয়োজন। আপাতত সেই সময় আমাদের হাতে নেই।
ইউএসএ, ইউকে সহ উন্নত বিশ্বের প্রায় সকল সরকার প্রদান এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন – তাদের ভাষায় গিনিপিগ হয়েছেন। হাজার হাজার ডাক্তার, গবেষক, ভাইরোলজিস্ট এই ভ্যাকসিন উৎপাদনের পুরো প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত। বিশ্বের মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। তাদের সবার চেয়ে আপনি নিজেকে বেশি স্মার্ট ভাবেন? ছোটখাটো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যা দেখা যাচ্ছে এতেই ওনারা মানুষকে গিনিপিগ হিসেবে আখ্যা দেয়া শুরু করেছেন। ওনারা নাকি পাঁচ বছরের আগে ভ্যাকসিন নিবেন না। তা নিবেন কি না তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। সাধারণ মানুষকে আতংকিত করতে অপচেষ্টা করার অধিকার ওনাদেরকে কে দিলো?
কেন রে ভাই? কোটি মানুষ গিনিপিগ সেজে নিরাপদ ভ্যাকসিন উৎপাদন করে আপনার সামনে প্লেটে তুলে দিবে আর আপনি গপাগপ গিলে ফেলবেন? বড় বড় বুলি না কপচিয়ে মানব কল্যাণে এগিয়ে এসে নিজেকে গিনিপিগ বানাতে এত অনীহা কেন? এই সৎসাহস না থাকলে চুপ থাকেন। হিপোক্রেটিস এর চুড়ান্ত নমুনা প্রদর্শনের কোনো দরকার নেই। নির্বুদ্ধিতার সীমা লংঘন করে বানরের খেলা দেখার মতো মুডে এখন কেউ নেই বিশ্বে। ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন, বিশ্ব স্বাভাবিক হোক – আপনাদের বাঁদর নাচের দর্শক তো আমরাই। ভাবটা এমন যে সৈনিকেরা সারাক্ষণ সীমান্তে প্রাণ দিবে আর আমরা সিভিলিয়ানরা ডাইনিং টেবিলে বসে, চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই যুদ্ধ জিতে বগল বাজাবো। গবেষণায় অংশ নেবার দায়িত্ব কি কেবল বোকা মানুষদের? আপনাদের মতো বুদ্ধিমানেরা গর্তে বসেই জীবন পার করে দিবেন?
আমি যদি বলি যে, “আমি এখন ভ্যাকসিন নিবোনা” সেটি বলবো ভিন্ন কারণে। এই কারণে নয় যে আমি গিনিপিগ হয়ে যাচ্ছি। আমি ততদিন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিবোনা যতদিন পর্যন্ত দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে ভ্যাকসিন না পৌঁছেছে। সদিচ্ছা থাকলে হাত তুলতে পারেন।
মনসুর আলম- কবি ও সাহিত্যিক।